ভারত প্রতিবেশী নীতিতে বাংলাদেশকে প্রথম গণ্য করে : প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক উন্নয়নের পরিপূরক হচ্ছে যখন নয়াদিল্লি তার প্রতিবেশী নীতিতে ঢাকাকে প্রথম গণ্য করে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আজ সত্যিই বহুমুখী এবং পারস্পরিক উন্নয়নের পরিপূরক।’
গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ভারতীয় হাইকমিশনে ‘ভারত বিচিত্রা’ সাময়িকীর সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এর বিশেষ সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার এ কথা বলেন।
প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশ এমন একটি চমৎকার সম্পর্ক উপভোগ করছে, বিশ্বে যার জুড়ি মেলা ভার।’
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়... আমরা প্রায়ই যেমনটি বলে থাকি, আমাদের কাছে প্রতিবেশী প্রথম, আসলে প্রতিবেশী দ্বিতীয়... বাংলাদেশই প্রথম।’
প্রণয় ভার্মা উল্লেখ করেন, ‘ভারত যখন জি২০ এর প্রেসিডেন্ট হয়, নয়াদিল্লি সেই গুরুত্বপূর্ণ বহুজাতিক প্ল্যাটফর্মের আলোচনায় যোগ দিতে বাংলাদেশকে বিশেষ অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানায়।’
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি—বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদান রাখা, বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, প্রতিকূলতা উত্তরণ এবং অগ্রগতি অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প বিশ্বমঞ্চে শোনা যাবে এবং তা থেকে অন্যরা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিতে পারবে।’
প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘নয়াদিল্লি জি-টোয়েন্টিতে বিশেষ অতিথি দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়ে শুধু ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক বন্ধুকে সম্মানিতই করেনি বরং অংশীদারিত্ব ও বন্ধুত্ব উদযাপন করছে।’
বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে আজ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে জানিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘আমাদের অগ্রসরমান অগ্রগতি এবং একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য আমাদের ক্রমবর্ধমান উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে এবং নতুন গতিবেগ সঞ্চার করছে।’
প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমাদের দুদেশের নেতাদের প্রভূত মাত্রার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।’
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘ভারত বিচিত্রার বিশেষ সংস্করণ ভারতীয় হাইকমিশনের এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকাশনার ৫০তম বছরকেও চিহ্নিত করেছে। এ ৫০ বছরে ভারত বিচিত্রা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এবং মাইলফলককে ধারণ করেছে এবং সব ভাবাবেগ এবং পারস্পরিক সহানুভূতিরও আধার হয়েছে।’
প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘ভারত বিচিত্রা বাংলাদেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভারতের অবস্থান বাড়াতে একটি মূল্যবান প্ল্যাটফর্ম। এ সাময়িকীর প্রথম সংখ্যাটি ১৯৭৩ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালেও এর প্রকাশনা নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত রয়েছে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার উন্মোচন করা বিশেষ সংস্করণে ভারতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র ও সমৃদ্ধি তুলে ধরে এমন নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, অনুবাদ রয়েছে এবং সেই সঙ্গে এটি এ অঞ্চল ও বিশ্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অবদানের বিবরণও ধারণ করে।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, বাংলা একাডেমির সভাপতি লেখিকা সেলিনা হোসেন ও মহাপরিচালক কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এবং বেশ ক’জন বিশিষ্ট কবি অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন।