ভারত ভ্রমণে শর্ত শিথিল করায় বেনাপোলে বেড়েছে যাত্রী পারাপার
ভারত ভ্রমণে শর্ত শিথিল করায় যশোরের বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে হঠাৎ করে বেড়েছে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার। গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন ও দূতাবাসের ছাড়পত্র (এনওসি) উঠে যাওয়ায় বেড়ে গেছে ভারত ভ্রমণ।
তবে উভয় দেশের যাত্রীদের জন্য বলবৎ রয়েছে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়লে সীমান্ত পথে যাত্রী চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শুধু চিকিৎসা ও ব্যবসায়ীদের জন্য চালু করা হয় ভিসা। বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ভারত যেতে অনুমোদন দেয় উভয় দেশের সকরার। কিছুদিন পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের অনুমোদন নিয়ে মেডিকেল ভিসা এবং বাণিজ্যিক ভিসার অনুমোদন দেওয়া হয়।
ফলে এতসব শর্ত মেনে বিড়ম্বনায় পড়ে যাত্রীরা। যাত্রীর সংখ্যাও কমে যায়। প্রতিদিন মাত্র ১০০ থেকে ২০০ যাত্রীর চলাচল ছিল ভারতে। সম্প্রতি শর্ত শিথিল করায় এ পথে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী ভ্রমণ শুরু করেছে।
জানা যায়, গত এক সপ্তাহে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছয় হাজার ৩৭২ জন যাত্রী চলাচল করেছে। এরমধ্যে ১২ সেপ্টেম্বর ৭১৬ জন, ১৩ সেপ্টেম্বর ৬২৯ জন, ১৪ সেপ্টেম্বর ৮৪৫ জন, ১৫ সেপ্টেম্বর ৫২৯ জন, ১৬ সেপ্টেম্বর এক হাজার ২২৪ জন, ১৭ সেপ্টেম্বর এক হাজার ২২৭ জন এবং ১৮ সেপ্টেম্বর এক হাজার ২০২ জন যাত্রী ভারতে যাতায়াত করেছে।
গত ২৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ভারতফেরত যাত্রীদের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন। যাত্রীর নিজ খরচে কোয়ারেন্টিনে থাকা-খাওয়ার কারণে কমে যায় ভারত ভ্রমণ। ফেরার সময় ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশন থেকে এনওসি বাধ্যতামূলক করায় কমে যায় যাত্রী পারাপার। তবে মুমূর্ষু রোগীরা সব শর্ত মেনে ভারত ভ্রমণ করে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব বলেন, ‘উভয় দেশের শর্ত শিথিল এবং করোনাভাইরাস মহামারি তুলনামূলক কমে যাওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে পাসপোর্ট যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যায়। ট্যুরিস্ট ভিসা ছাড়লে হয়ত বা যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজারে গিয়ে পৌঁছাবে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়।’
বর্তমানে মেডিকেল ভিসা, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, স্টুডেন্ট ভিসার পাশাপাশি টিএফ ভিসার যাত্রীও চলাচল করছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি আদেশ এসে পৌঁছেছে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে। ওই আদেশে জানানো হয়েছে, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি দূতাবাসের এনওসি ছাড়াই সপ্তাহে সাতদিন দেশে ফিরতে পারবেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।
আদেশে বলা হয়েছে, সপ্তাহে সাতদিনই ভারত থেকে দুদেশের পাসপোর্টধারীরা চলাচল করতে পারবেন। আসার সময় তাদের অবশ্যই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে আনতে হবে।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউছুফ আলী বলেন, ‘সপ্তাহে তিন দিনের পরিবর্তে এখন থেকে সাত দিনই যাত্রীরা দেশে ফিরতে পারবেন। তবে ৭২ ঘণ্টার করোনা নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক। যে সমস্ত যাত্রীর শরীরে করোনার উপসর্গ বা পজিটিভ থাকবে তাদের অবশ্যই আইসোলেশনে থাকতে হবে।’