ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে লাঞ্ছনার মামলায় ১৭০ আসামি, গ্রেপ্তার ৩
নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছনার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দেওয়াসহ শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পোড়ানো এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) মুরসালিন বাদি হয়ে ১৭০ জনকে আসামি করে গত সোমবার দুপুরে মামলা করেন।
এর মধ্যে আড়পাড়া গ্রামের মির্জাপুর বাজারের মোবাইল ফোন মেরামতকারী শাওন (২৮), মির্জাপুর গ্রামের অটোচালক রিমন (২২) এবং একই গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে (২৭) গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।
পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মুখপাত্র নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে লেখেন, “প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম।” এ পোস্ট দেওয়ার পর গত ১৮ জুন সকালে কলেজে আসেন রাহুল। এরপর তার বন্ধুরা পোস্টটি মুছে ফেলতে বললেও তিনি তা করেননি।
শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানায়। একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। কলেজ চত্বরে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিপেটাসহ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হয়।
এদিকে, রাহুল দেব রায়ের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ এনে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ লোকজন ঘটনার দিন ১৮ জুন বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়কে গলায় জুতারমালা পরিয়ে দেয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।