ভাষাশহীদদের স্মরণে একুশের সন্ধ্যায় লাখো মোমবাতি প্রজ্বলন
“অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো” এই স্লোগানকে সামনে রেখে লাখো মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে নড়াইলবাসী স্মরণ করল ভাষাশহীদদের। প্রতি বছরের মতো এবারও ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ কুড়িরডোব মাঠে আয়োজন করা হয়। এর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
হাজারো দর্শকের আগমণে মুখরিত হয়ে ওঠে কুড়িরডোব মাঠ। ঢাকা, বাগেরহাট, যশোর, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, সাতক্ষিরা, খুলনা, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগতরা নয়নাভিরাম এ দৃশ্য দেখে তাদের নয়ন জুড়ান। এদিন সকাল থেকে স্বেচ্ছাসেবকেরা মাঠকে বিভিন্ন আল্পনা দিয়ে সাজান।
নড়াইল একুশ উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে ভাষা শহীদদের স্মরণে ১৯৯৭ সালে নড়াইলে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন শুরু হয়। প্রথম বছরে ১০ হাজার মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হলেও প্রতিবছর এর ব্যপ্তি বেড়েছে। প্রতি বছরের মত মোমবাতির আলোয় দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে চারিদিক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকারসহ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আয়োজকেরা। সন্ধ্যার পরপরই মোমবাতির আলোতে আলোকিত হয়ে ওঠে বিশালাকৃতির এ মাঠ।
মোমবাতির আলোয় শহীদ বেদী, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আল্পনা ও পাখিসহ গ্রাম-বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। বিশাল এই আয়োজন দেখতে প্রতিবারের মতো এবছরও দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ খেলার মাঠে এসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন দেখেন। সন্ধ্যায় কুরিরডোব মাঠের লাখো মোমবাতি একসঙ্গে জ্বলে ওঠে, সেই সঙ্গে ‘আমার ভায়ের রক্ত রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এই গানের মধ্য দিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গণসংগীত শুরু হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রবিউল ইসলাম, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, কিক্রেটার ও সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মুর্ত্তজার বাবা গোলাম মুর্তজা স্বপন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবিরসহ সংশ্লিষ্টরা। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন একুশের আলো’র সদস্য সচিব ও নাট্যব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার।