‘ভিডিও কলে’ এরশাদ শিকদারের মেয়ের আত্মহত্যা, প্রেমিকের জামিন
এরশাদ শিকদারের মেয়ে জান্নাতুল নওরিন এশার (২২) আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় প্রেমিক প্লাবন ঘোষ ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরী এই আদেশ দেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, আজ আসামিপক্ষের আইনজীবী আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক শুনানি শেষে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
জিআরও বলেন, এর আগে হাইকোর্ট থেকে প্রেমিক প্লাবন ঘোষ ছয় সপ্তাহের জামিন পান। সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন প্রেমিক প্লাবন।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত ৩ মার্চ জান্নাতুল নওরিন এশা (২২) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। রাজধানীর গুলশানের শাহজাদপুরের সুবাস্তু টাওয়ারের বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এশার মা সানজিদা আক্তার (৪৮) আলোচিত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের দ্বিতীয় স্ত্রী। সানজিদার দাবি, আত্মহত্যার সময় এশা প্লাবনকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছে।
ঘটনার দিন এনটিভি অনলাইনের কাছে সানজিদা আক্তার দাবি করেন, সারা রাত প্লাবনের সঙ্গে বাইরে কোথাও ছিল এশা। রাত সাড়ে ৩টার দিকে শাহজাদপুরের ওই ভবনের সামনে এশা ও প্লাবনের মধ্যে কথা কাটাকাটি, ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এশার আত্মহত্যার পর এ ঘটনায় তাঁর প্রেমিক প্লাবন ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা করেন সানজিদা আক্তার। গুলশান থানায় করা এ মামলায় প্লাবনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে আত্মহত্যায় প্ররোচণার।
জানা গেছে, এশা টিকটকে সক্রিয় ছিলেন। টিকটকে তাঁর কয়েকটি ভিডিও দেখা যায়।
গুলশান থানায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্লাবন শাহজাদপুরের বাসায় যান। তারপর এশা ও তাঁর বান্ধবী খন্দকার সুমি আক্তারকে নিয়ে ঘুরতে যান প্লাবন। সুমির মাধ্যমে জানা যায়, মুঠোফোনে কল আসাকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, এসবের মধ্যে রাত ১১টার দিকে তাঁদের সুমি নিজের বাসায় নিয়ে যান। কিন্তু, সুমি তাঁদের মধ্য আপস করতে ব্যর্থ হন। পরে এশা ও প্লাবন সুমির বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর আনুমানিক ভোর পৌনে ৫টার দিকে এশা বাসায় ফিরে তাঁর কক্ষের ছিটকিনি লাগিয়ে দেন। সানজিদা তখন বাসায় ড্রইং রুমে ঘুমান বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী সানজিদা আরও বলেছেন, ভোর ৫টা ২৪ মিনিটে প্লাবনের কাকা এশার বান্ধবী সুমিকে ফোন করে বলেন, ‘তুমি দ্রুত এশার বাসায় যাও। এশা প্লাবনের সঙ্গে পাগলামি করছে, আত্মহত্যার চেষ্টা করছে।’এরপর প্লাবন এশার মা সানজিদাকে কল করে জানান, এশা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করছে। পরে দ্রুত সানজিদা দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন, দরজার ছিটকিনি লাগানো। পরে বাসার নিরাপত্তাকর্মীসহ অন্যরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, এশা ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, আত্মহত্যার ঘটনার পর সুমির মাধ্যমে সানজিদা জানতে পারেন, এশা ও প্লাবনের ধর্ম আলাদা হওয়ায় সম্পর্ক আর না এগিয়ে নিতে প্লাবন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে জান্নাতুল নওরিন এশাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে।