ভোলার লঞ্চ-ফেরিঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল
ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ঢল ভোলার লঞ্চ ও ফেরিঘাটগুলোতে। লোকাল বাসের মতো দাঁড়িয়ে, গাদাগাদি করে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসছে যাত্রীরা।
ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি। শেষ মুহূর্তে মানুষের ঢল শুরু হয়েছে দ্বীপ জেলা ভোলার লঞ্চ ও ফেরিঘাটে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের হাজারো মানুষ আসছে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট হয়ে।
যাত্রীদের অভিযোগ, লঞ্চে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে লোকাল বাসের মতোই দাঁড়িয়ে আসতে হচ্ছে। আবার কারো কারো মতে, পরিস্থিতি এমন যে ‘করোনা যেন এখন ছুটিতে গেছে’ বলেও মন্তব্য করেন অনেক যাত্রী।
জুম্মান নামের একজন যাত্রী বলেন, ‘আসতে হবে বলেই এসেছি। না হলে এত ঝুঁকি নিয়ে আসতাম না। স্বাস্থ্যবিধি বলতে কিছুই মানা হচ্ছে না। শুধু মুখেই এসব বলা হচ্ছে, বাস্তবে নেই কিছুই।’
এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ঢাকা থেকে আসা লালমোহনের বাসিন্দা মো. ফখরুল ইসলাম। পরিবার নিয়ে আসার জন্য লঞ্চের যাত্রী হয়েছেন। ভাড়া নিয়েছে প্রায় দিগুন। তবে স্বাস্থ্যবিধির কিছু মানা হচ্ছে না। কর্ণফুলী লঞ্চ নয়, যেন মারণ ফাঁদ। একই ক্ষোভ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ‘দোয়েল পাখি’ লঞ্চের যাত্রীদের।
তবে দোয়েল পাখির লঞ্চের ম্যানেজার মো. মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ঈদ বলেই সমস্যা হচ্ছে। তারপরেও স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা করছি। আর ঢাকার সদরঘাটে প্রশাসন থাকে, তা হলে আমাদের দোষটা কোথায়?
সত্যতা স্বীকার করেন ‘গ্রিন লাইন’ লঞ্চের ম্যানেজার লক্ষ্মণ চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘বাসের মতো লোকজন এসে দাঁড়ায়-বিষয়টি এমন নয়। হয়তো অনেকেই হাঁটাহাঁটি করে, তাই এমনটা মনে হচ্ছে।’
এদিকে, চট্টগ্রামের হাজার হাজার যাত্রী লক্ষ্মীপুর তারপর মজুচৌধুরী ঘাট হয়ে লঞ্চ, সি-ট্রাক বা ফেরি করে আসে। এসব আসা-যাওয়ার পথে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। এছাড়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা পার হচ্ছে ডেঞ্জার জোন উত্তাল মেঘনায় ট্রলারে করে। এসব বিষয় দেখভাল করার দায়িত্বে থাকে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের। তাদের জানালেও কোনো লাভ হচ্ছে না। এসব লঞ্চ এবং ফেরিঘাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা খুব একটা দেখা যায়নি। যদিও কোস্টগার্ডকে মাঝে মাঝে লঞ্চঘাটে দেখা যায়, এরপর তারা রুমে ঢুকে বসে থাকে।
এদিকে, যাত্রীদের এসব অভিযোগ স্বীকার করে লঞ্চ ও বিআইডব্লিউটিআই কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, ঈদের সময়, তাই এখন যাত্রী বেশি। তবে ঢাকার সদরঘাটে প্রশাসন তদারকি করছে বলে জানালেন বিআইডব্লিউটিআইএর ভোলার ইলিশা ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. রকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখী মানুষের ঢল। আমাদের কিছু করার নেই।’