ভোলায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, স্যালাইনের সংকট
ভোলায় ডায়রিয়া পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত সাতদিনে প্রায় দেড় হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসাকর্মীরা। বৃষ্টি না হওয়া, অপরিষ্কার পানি এবং বেশি গরমের ফলে ডায়রিয়া বেড়েছে বলে জানালেন জেলা সিভিল সার্জন। এ ছাড়া সংকট দেখা দিয়েছে স্যালাইনের।
জানা গেছে, প্রতিদিন শত শত মানুষ ভোলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছে। রোগীদের সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার ও নার্সরা। করোনার মধ্যে এমন পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলেছে স্বাস্থ্য বিভাগকে। যে কারণে সেবা না পেয়ে নার্স ও চিকিৎসকদের প্রতি ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের। শুধু তাই নয়, স্যালাইন ও ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগ করলেন রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলা সদর হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে সেবা নিচ্ছে অসংখ্য ডায়রিয়ার রোগী। হাসপাতালে বেড না পেয়ে অনেকেই বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার রোগী বেশি।
ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা থেকে রোগীর সঙ্গে আসা স্বজন মো. ইউসুফ বলেন, ‘স্ত্রী নাজমা বিবিকে ডায়রিয়া থেকে সুস্থ করে বাড়িতে নেওয়ার পরে ছেলে নুরনবী (৯) আক্রান্ত হয়। ছেলেকে এখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খাবার থেকে এমনটি হয়নি, তবে যতটুকু মনে হয়, পরিবেশগত কোনো কারণে এমনটা হতে পারে।’
ছোট বোন ছাহেরা বেগম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাঁকে নিয়ে আজ সকালে ভেদুরিয়া থেকে ভোলা সদর হাসপাতালে আসেন মো. সবুজ (৩৮)। ডাক্তার ও নার্সদের সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেলেন তিনি।
এ ছাড়া কোনো ধরনের ওষুধ না পাওয়া এবং স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে সবকিছু করতে হচ্ছে বলে জানালেন দৌলতখান উপজেলার চরপাতা থেকে আসা মো. সাহাবুদ্দিন (৩০) নামের এক রোগীর স্বজন।
সাহাবুদ্দিন বলেন, কোনো ধরনের সেবা দিচ্ছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে পরিস্থিতি খারাপ জানিয়ে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘ডায়রিয়ার এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সংকট দেখা দিয়েছে স্যালাইনের। এ জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে স্যালাইন চেয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত তা পাওয়া যাবে। তবে রোগী বেশি বলে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
তবে এজন্য দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়া, খাল ও পুকুরের পানি খাওয়া, পঁচাবাসি খাবার এবং অতিমাত্রায় গরম খাবার খাওয়ায় বেশি ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিভিল সার্জন।