ভৈরবে ছুরিকাঘাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আহত
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মাদক কারবারির ছুরিকাঘাতে আসিফুল হক নামে এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ভৈরবের শহীদ আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়াম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকার আজিজুল হকের ছেলে। তিনি ঢাকার ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী। স্থানীয় মাদকবিরোধী সংগঠন নবজাগরণ কলেজপাড়া যুব সংঘের সভাপতি এবং মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের নেতাও তিনি।
অভিযুক্ত মাদক কারবারি মো. তপু (৩২) সরকারি হাজী আসমত কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় আজ রোববার তপুকে প্রধান অভিযুক্ত করে ভৈরব থানায় মামলা হয়েছে। মামলার বাদী আসিফুলের ফুফাতো ভাই আসাদ মিয়া।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তপু এলাকায় মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত। কলেজপাড়া এলাকায় এখন মাদক সেবন ও বিক্রি, দুই বেড়েছে। একাধিক চক্রের মাধ্যমে মাদকব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। তপু একটি চক্রের নেতৃত্বে আছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিদিন তপুর তত্ত্বাবধানে অসংখ্য মানুষ, বিশেষ করে তরুণরা ইয়াবা সেবন করছে। মাদকের ভয়াবহতা বেড়ে যাওয়ায় এলাকায় চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধ বেড়ে গেছে।
আসিফুল হক তার সংগঠনটির মাধ্যমে এসবের প্রতিবাদ করে আসছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে তরুণরা সংঘবদ্ধ হয়ে মাদকের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এতে তপু ক্ষুব্ধ হন এবং এই বিষয়ে চুপ থাকতে আসিফুলকে হুমকি দেন। কিন্তু আসিফ পিছু না হটে মাদকবিরোধী আন্দোলন আরও বেগবান করছিলেন।
গতকাল সন্ধ্যায় আসিফকে স্টেডিয়াম এলাকায় পায় তপু ও তার লোকজন। তখন তারা আসিফকে ধাওয়া করে ছুরিকাঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় আসিফকে বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মুঠোফোনে আসিফুল হক বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে চলাটাই আমার অপরাধ। মাদকের বিরুদ্ধে কথা না বলার জন্য মাদক ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ক্রমাগত হুমকি পেয়ে আসছি। সম্প্রতি তপু আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে।’
আসিফুল হক জানান, চিকিৎসক তাঁকে জানিয়েছেন কয়েকটি আঘাতের মধ্যে পিঠে ও ডান হাতের আঘাতটি গুরুতর।
মামলা হওয়ার পর তপুসহ তার সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের মুঠোফোনও বন্ধ। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তপুর এক সহযোগী বলেন, তপু মাদক সিন্ডিকেটের নেতা—এ তথ্য সঠিক নয়।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাকিব হাসান বলেন, মামলা হয়েছে হামলা করার ধারায়। বাদী আসিফুলের ফুফাতো ভাই আসাদ মিয়া। মামলায় অভিযুক্ত মোট পাঁচজন। অপর চারজন হলেন তপুর সহযোগী নবী হোসেন, কালাম মিয়া, মো. হৃদয় ও মামুন মিয়া। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও তৎপরতা অব্যাহত আছে।