ভৈরবে ৩ দিনব্যাপী পাদুকা শিল্পমেলা
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী পাদুকা শিল্পমেলা। আজ রোববার দুপুরে (৫ মার্চ) এ মেলা উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ।
ভৈরব পাদুকা কারখানা মালিক সমবায় সমিতির উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত এই মেলায় ৩০টি কারখানা তাদের তৈরি পাদুকার পসরা সাজিয়ে বসেছে। মেলায় রাজধানী ঢাকাসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, সিলেট অঞ্চলের পাইকারি ক্রেতারা আসছেন।
মেলার উদ্বোধন উপলক্ষে ভৈরব পৌরসভার মেয়র আলহাজ ইফতেখার হোসেন বেনুর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ইউএনও মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ, প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রবৃদ্ধির সিনিয়র ম্যানেজার মেহজাবিন আহমেদ, ভৈরব পাদুকা কারখানা মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আল আমিন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক সবুজ মিয়া প্রমুখ।
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ভৈরব পাদুকাশিল্প মালিক সমবায় সমিতির স্থানীয় পাদুকা শিল্প খাত উন্নয়ন ও বাজার সম্প্রসারণে মেলার উদ্যোগটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ ধরনের আয়োজন এই শিল্পের বাজার সম্প্রসারণসহ উদ্যোক্তাদের বাজার সংযোগের সক্ষমতা বাড়বে। এ সময় বাজার সম্প্রসারণের পাশাপাশি এ খাতের মান উন্নয়নেও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে পৌরসভার মেয়র আলহাজ মো. ইফতেখার হোসেন বেনু বলেন, ভৈরবের পাদুকা শিল্পের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাত যদি একত্রে কাজ করে, তাহলে পোশাক খাতের মতো এ শিল্প দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, ভৈরব পাদুকা শিল্প মালিক সমবায় সমিতি এ খাতের সামগ্রিক উন্নয়নে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ধরনের আয়োজন দেশের রাজস্ব বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
ভৈরব পাদুকা শিল্প মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আলামিন মিয়া বলেন, ভৈরবের পাদুকা শিল্পের উন্নত বাজার সংযোগ নিশ্চিতকরণে ও জাতীয় পর্যায়ে পণ্য বাজারজাতকরণে এ ধরনের মেলার নিয়মিত আয়োজন সময়ের দাবি।
প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রবৃদ্ধির সিনিয়র ম্যানেজার মেহজাবিন আহমেদ বলেন, সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে সুইসকন্ট্রাক্ট এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিডি) যৌথ উদ্যোগে প্রবৃদ্ধি প্রকল্পটি বাংলাদেশের আটটি পৌরসভার সঙ্গে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ভৈরবের পাদুকাশিল্পের উন্নয়ন এই কর্মসূচীর অন্যতম।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের তাঁতশিল্পের বিপর্যয়ের ঢেউ ভৈরবেও লাগে। পর্যায়ক্রমে এখানকার তাঁত শিল্প বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কর্ম হারা তাঁত শিল্পের মালিকরা তাদের শ্রমিকদের নিয়ে গড়ে তুলেন পাদুকা কারখানা। যেগুলো বর্তমানে সম্প্রসারিত হয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ হাজার কারখানায় রূপ নিয়েছে। যার মধ্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ রপ্তানিমুখী ১৫ থেকে ২০টি বড়পরিসরের কারখানাও আছে। আর এসব কারখানায় এক লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন। নারী শ্রমিকও কাজ করেন ১৫ থেকে ২০ হাজার।