ভোলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ৩০
ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১২ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন এবং স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম রাকিবের সমর্থকের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে।
সংঘর্ষের সময় ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, নির্বাচনি কার্যালয় ও ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় রতনপুর ও শান্তিরজাট বাজারে ব্যাপক বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এর জন্য পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন দুই প্রার্থী।
জানা গেছে, সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিদ্রোহী) সিরাজুল ইসলাম রাকিবের কয়েকজন সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয় উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জনকে। এর মধ্যে গুরুতর ১২ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলাকালে রতনপুর বাজারে নৌকা প্রতীকের একটি নির্বাচনি কার্যালয়সহ দুই প্রার্থীর চারটি নির্বাচনি কার্যালয় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থকের ঘর ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর উত্তেজিত সমর্থকেরা দুই ভাগে অবস্থান নেওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আওয়ামী লীগসমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের অভিযোগ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক চলাকালে খবর পান, তাঁর তিনটি নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে এবং পিটিয়ে ও কুপিয়ে ১০ থেকে ১২ জন কর্মীকে আহত করা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচন বানচাল করার জন্য এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।
অপরদিকে, পাল্টা হামলার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন, ইভিএমে ভোটের নিয়ম দেখানোর সময় নৌকার সমর্থকেরা গুলি করে হামলা চালায়। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নেওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ১৪ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হন। তবে নির্বাচনি কার্যলয় ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
এদিকে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজা জানিয়েছেন, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুপক্ষ রাস্তায় অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিচ্ছিল। তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি শিবপুর ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মোট আট জন চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে জসিম উদ্দিন ও সিরাজুল ইসলামের মধ্যে।