মওলানা ভাসানীর ১৪২তম জন্মদিন আজ
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪২তম জন্মদিন আজ ১২ ডিসেম্বর। ১৮৮০ সালের এই দিনে সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মওলানা ভাসানীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষ্যে পৃথক বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
হাজী শারাফত আলী ও বেগম শারাফত আলী দম্পতির সন্তান আবদুল হামিদ খান। ইসলামিক শিক্ষার উদ্দেশে ১৯০৭ সালে তিনি দেওবন্দ গিয়ে দুই বছর অধ্যয়নের পর আসামে ফিরে আসেন। ১৯১৭ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ময়মনসিংহ সফরে এলে তাঁর ভাষণ শুনে অনুপ্রাণিত হন ভাসানী। ১৯১৯ সালে কংগ্রেসে যোগদানের পর খেলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ১০ মাস কারাভোগ করেন। ১৯২৬ সালে আসামে প্রথম কৃষক-প্রজা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান তিনি। ১৯২৯ সালে আসামের ধুবড়ী জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাসানচরে প্রথম কৃষক সম্মেলন করেন। এরপর থেকে তাঁর নামের শেষে ভাসানী যুক্ত হয়।
রাজনীতির পাশাপাশি সমাজ সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন ভাসানী। আসামে তিনি ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৭১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর কলকাতায় মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ, ন্যাপসহ পাঁচ রাজনৈতিক দলের নেতাদের বৈঠকে ‘জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি’ গঠিত হয়, যা ‘সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদ’ নামে পরিচিতি লাভ করে। আট সদস্য বিশিষ্ট এ পরামর্শক কমিটির সভাপতি ছিলেন মওলানা ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ। আন্তর্জাতিক শক্তিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনুকূলে আনতে এ কমিটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
যুদ্ধের পুরো সময় মওলানা ভাসানী ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছিলেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সহায়ক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘ, চীন, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে তারবার্তা প্রেরণের পাশাপাশি তাঁর আন্তর্জাতিক প্রভাবের সর্বাত্মক ব্যবহার করেছিলেন।
ভারতে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ১৯৭৬ সালে লং মার্চ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেন তিনি। এ বছর ১৭ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান এ বরেণ্য রাজনীতিবিদ।