মধ্যবিত্তদের অফিস যাতায়াতে গাড়ি ভাড়া বেড়েছে ছয় হাজার
রাজধানীতে মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীদের অফিস যাতায়াতে ভাড়া দুই হাজার ১০০ থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তেলের দাম ও গাড়ি ভাড়া বাড়ানোর পর অফিসগামী যাত্রীদের ওপর গবেষণা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
আজ বুধবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এড়ানো যেত কি না’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, যারা কর্মজীবী-শ্রমজীবী আছেন, তাদের প্রায় ৮০ শতাংশের বেতনে যাতায়াত ভাড়া দেওয়া হয় না। আমরা বেশকিছু চাকরিজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। যারা বেতন পান সর্বনিম্ন তিন হাজার ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আমরা দুদিনে ২৮টি বাস কাউন্টারে পর্যবেক্ষণ করেছি। অফিসগামীদের প্রতিদিন যাতায়াতে বাসভাড়া সর্বনিম্ন ৭০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যার পরিমাণ দুই হাজার ১০০ থেকে ছয় হাজার। যার বেতন তিন হাজার ২০০ টাকা, তিনি দুই হাজার ১০০ টাকা ভাড়া দেবেন কীভাবে?
মোজাম্মেল হক বলেন, একজন চাকরিজীবীর সঙ্গে আমি কথা বললাম, যিনি বেতন পান ১০ হাজার টাকা। দোকানে চাকরি করেন। তার স্ত্রীও চাকরি করেন। ঢাকায় সাবলেট থাকতেন। কিন্তু এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি গ্রামে চলে যাবেন। কারণ তার প্রতিদিন ৭০ টাকা গাড়ি ভাড়া ধরে মাসে দুই হাজার ১০০ টাকা ভাড়া বেড়েছে। মাসে চার বার বাড়িতে যান এমন অনেক চাকরিজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের চার বারের যাতায়াতে অনেকের এক হাজার আবার অনেকের চার হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া বেড়েছে।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আরও বলেন, আমরা দুদিনে ২৮টি বাস কাউন্টারে পর্যবেক্ষণ করেছি। সরকার বাড়িয়েছে আড়াই টাকা। কিন্তু সিটিতে প্রতি কিলোতে ৩ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। রাষ্ট্র তার মানুষকে সব ধরনের সুযোগ দেবে। কিন্তু রাষ্ট্রের অসহযোগিতার কারণে মানুষের ওপর যে চাপটা তৈরি হয়, যে অর্থনৈতিক ধাক্কাটা পান, তাদের ব্যাপারে আমাদের কোনো ধারণা নেই। সরকার বাড়ালো জ্বালানি তেলের দাম। কিন্তু বেড়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া। আমি জানতে চাইলাম একজন সিএনজিচালকের কাছে ভাড়া কেন বাড়াচ্ছেন, তিনি বলেন- চালের দাম বাড়ছে। আমাদের তো বাড়াতেই হবে। একজন রিকশাওয়ালার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তিনি ২০ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, আগে আমার ৮০০ টাকা ইনকাম হলেও সংসার চালাতে পারতাম। এখন খরচ বেড়েছে।
মোজাম্মেল হক বলেন, যেহেতু এসব বিষয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। এজন্য সরকারের বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক ডিন ড. ইজাজ হোসেন, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান।