মসজিদে জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলুন : আলেমদের প্রধানমন্ত্রী
মসজিদে খুতবা পড়ার সময় জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি এবং নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে দেশের আলেম, ওলামা ও খতিবদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ আলেম, ওলামা, খতিব ও ইমামদের শ্রদ্ধা করে। তাই আপনাদের কথাবার্তা বা আলাপ-আলোচনা তাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রধানমন্ত্রী আজ সোমবার (১৭ এপ্রিল) তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে চতুর্থ ধাপে দেশজুড়ে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনারা যদি মসজিদে বয়ানের সময় নারীর প্রতি সহিংসতা দূরীকরণ, জঙ্গিবাদ, গুজব-অপপ্রচার, গৃহকর্মীদের প্রতি অমানবিক আচরণ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেশি বেশি আলোচনা করেন জনগণ তা গ্রহণ করবে।’
শেখ হাসিনা বিশেষ করে জুমার নামাজের আগে খুতবা পাঠে এসব বিষয়গুলো আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম, এর মূল বাণী দেশব্যাপী পৌঁছে দিতেই সারা দেশে মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ইসলাম ধর্মের প্রচার-প্রসার, ইসলামী শিক্ষা যাতে আরও উন্নতমানের হয়, সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা ২০১৩ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছি। কওমি মাদরাসায় দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমানের মর্যাদা আমরা এনে দিয়েছি। ইসলাম ধর্ম হলো শান্তির ধর্ম। যে ধর্মে নারীদের অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) যখন ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেছিলেন, তখন ইসলাম ধর্ম প্রথম গ্রহণ করেন একজন নারী।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬-২০০১ সালে যখন আমরা ক্ষমতায় ছিলাম তখন আমরা বিশেষ ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে দেই এবং এই ট্রাস্ট ফান্ডে আমরা সিড মানিও দেই। বৃদ্ধ বয়সে, অসুস্থ হলে যাতে করে তারা এই ট্রাস্ট থেকে সহযোগিতা পান, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা এই ট্রাস্ট ফান্ড তৈরি করে দিয়েছি।’
অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ৫৬৪টির মধ্যে এ পর্যন্ত ২০০ মসজিদ উদ্বোধন করেছেন। এর আগে তিনি প্রথম দফায় ২০২১ সালের ১০ জুন ৫০টি মসজিদ, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ৫০টি এবং তৃতীয় দফায় ১৬ মার্চ আরও ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেন। অবশিষ্ট মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালের জুন নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।