মাঝ নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হলো পুলিশের নৌকা, নারীসহ গ্রেপ্তার ১৬
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্রলারে মেয়ে নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশের টহল দল। পুলিশের দাবি, হামলাকারীরা তাদের সদস্যদের মারধর করে নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্য ও মাঝি আহত হয়। এ ঘটনায় দুই নারীসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার কাপাসিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
মনিরুজ্জামান খান জানান, গতকাল বুধবার গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে কমপক্ষে ৪৩ থেকে ৪৫ জনের একটি দল ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে নৌভ্রমণে বের হয়। তারা পার্শ্ববর্তী গফরগাঁও এবং শ্রীপুর উপজেলার বরমী এলাকার নৌপথ ঘুরে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে কাপাসিয়ার শীতলক্ষ্যা হয়ে ফিরছিল। তাদের সঙ্গে দুজন নারী নৃত্যশিল্পী ছিলেন। ওই নৌযানে উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে নেচে গেয়ে ডিজে পার্টি অনুষ্ঠিত হয়।
পরে চুক্তি অনুযায়ী ফেরার পথে পারিশ্রমিক না দেওয়ায় নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে যুবকদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে নৃত্যশিল্পীরা ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন দিয়ে শ্লীলতাহানি থেকে তাদের রক্ষা করতে পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ আলমের নেতৃত্বে পুলিশের চার সদস্যের একটি দল নৌকা নিয়ে কাপাসিয়ার সাফাইশ্রী এলাকায় পৌঁছে। এ সময় যুবকরা নৌযান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির খালি বোতল নিক্ষেপ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের নৌকার মাঝি রফিকুল ইসলামকে (৪৫) বেধড়ক মারধর করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় হামলাকারীদের নৌকার পিছু নেয় পুলিশ। কিছুদূর যাওয়ার পর যুবকরা তাদের নৌকা দিয়ে পুলিশের নৌকাকে ধাক্কা দিয়ে মাঝ নদীতে ডুবিয়ে দেয়। পুলিশের সদস্যরা আশেপাশের মাঝিদের সহায়তায় প্রাণে বেঁচে যান।
এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাহায্যের জন্য ট্রিপল নাইনে ফোন করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানা পুলিশের অপর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই নারীসহ ১৪ জনকে আটক করে। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যায়। আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ স্থানীয় নাকাসিনি ঘাট এলাকা থেকে যুবকদের নৌকার মাঝি মিলন (৪৫) ও হেলপার সাগরকে (৩০) আটক করে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতসহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে কাপাসিয়া থানায় মামলা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন শফিকুল ইসলাম, মাহবুব আলম, মো. রাসেল, মো. মারুফ, ইমরান, ইমন, মো. মেহেদী, মো. সুমন, মো. মুরাদ, মো. মাসুম, মো. ইমরান, নিহাদ মোল্লা, সোনিয়া, মুক্তা, মিলন ও সাগর। মিলন ও সাগর বাদে তাদের সবার বয়স ১৬ থেকে ১৮ এর মধ্যে। তাদের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ও নারায়াণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায়।
মনিরুজ্জামান খান আরও জানান, পুলিশের আহত এসআই সাজ্জাদ আলম, কনস্টেবল আরশেদ, মো. ইসমাইল ও আল-আমিনকে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত পুলিশের ট্রলারের মাঝি রফিকুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।