মাদারীপুরে ঋণের টাকার জন্য কৃষকের আত্মহত্যা
মাদারীপুরের ডাসারে বাবুল মল্লিক (৪৮) নামে এক কৃষক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার নবগ্রাম গ্রামে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় নিজ জমি বেদখল হওয়ায় আত্মহত্যার এ ঘটনা ঘটে।
বাবুল মল্লিক উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের নবগ্রামের রসরাজ মল্লিকের ছেলে। পুলিশ খবর পেয়ে নিহত ওই কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কৃষক বাবুল মল্লিক আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন তাঁর পরিবার।
বাবুল মল্লিকের পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কৃষক বাবুল মল্লিকের টাকার প্রয়োজন হওয়ায় তিনি প্রায় তিন বছর আগে একই গ্রামের হাকাই শিকদারের ছেলে লিটন শিকদারের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা সুদে আনেন। বাবুল গরিব কৃষক হওয়ায় তিন বছরেও সেই সুদের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। লিটন তার পাওনা টাকার জন্য নিয়মিত বাবুলকে চাঁপ দিয়ে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে সকালে ওই বাবুল মল্লিকের মরদেহ তার বাড়ির পাশে একটি আমগাছের সঙ্গে ঝুলতে অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে ডাসার থানা পুলিশ নিহত ওই কৃষক বাবুল মল্লিকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের পাঠান। তবে লিটনের সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কৃষক বাবুল আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন নিহত কৃষকের পরিবার। এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হলে পুরো এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
বাবুল মল্লিকের স্ত্রী বুলবুলি মল্লিক বলেন, ‘অভাবে পড়ে লিটন শিকদারের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা সুদে নিছিল আমার স্বামী। আমরা গরিব হওয়ায় সুদে আনা সেই পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দিতে পারি নাই। কিন্তু সে পাঁচ হাজার টাকার জায়গায় পাঁচ লাখ বসাইয়া আমাদের জমি দখল করছে। এটা দেখে আমার স্বামী মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যা করেছে। আমরা লিটন শিকদারের বিচার চাই।’
অভিযুক্ত লিটন বলেন, ‘বাবুল মল্লিকের কাছে আমি সুদে কোনো টাকা লাগাইনি। তবে আমার কাছে তার চাষের জমি বন্ধক রেখে কিছু টাকা নিয়েছে। এখন তার পরিবার অপপ্রচার করছে যে, সুদের টাকার জন্য আমি তাদের জমি দখল করেছি।’
এ ব্যাপারে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আত্মহত্যা করা কৃষক বাবুল মল্লিকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’