মাদারীপুরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা
পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে মাদারীপুরের মন্দির ও পূজামণ্ডপগুলোতে চলছে সাজ সাজ রব। প্রতিমাশিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কাজে। প্রশাসন পূজা নির্বিঘ্ন করতে তিন স্তরবিশিষ্ট কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মাদারীপুর জেলার পাঁচ উপজেলায় পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ রোধে ১৮ দফা দিকনির্দেশনা মেনে ৪৫০টি মণ্ডপে চলছে পূজার প্রস্তুতি। পূজা মণ্ডপগুলোতে চলছে প্রতিমাশিল্পীদের তুলির আচর ও সাজসজ্জা। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই প্রতিমার কারিগরদের। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে প্রতিমায় দোমাটি, রং ও তুলির কাজ।
গত বছরের চেয়ে এ বছর জেলায় পূজামণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে আটটি। হিন্দু সম্প্রদায়ের জনগণ অন্যান্য বছর বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পূজা উদযাপন করলেও এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে সাদামাটা ভাবেই ঢাকের তালে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা।
চলতি বছর জেলায় সর্বাধিক পূজামণ্ডপ রাজৈর উপজেলায়। এখানে ২৫৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া শিবচরে ৬৩টি, কালকিনিতে ২২টি, ডাসারে ৪১টি ও সদরে ৭১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যেই মণ্ডপের প্রতিমাগুলোতে মাটির কাজ শেষে চলছে রং তুলি আর সাজসজ্জার কাজ। একেক মন্দিরে ভিন্ন ভিন্ন সাজে সাজানো হচ্ছে প্রতিমা। যার যার সাধ্য মতো চলছে সাজসজ্জা। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সফল ও নির্বিঘ্ন করতে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পূজারি ও সুশীল সমাজের নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা মতবিনিময় সভার আয়োজন করে প্রশাসন। মণ্ডপের তালিকা করে চলছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অনুদান বরাদ্দের কাজ। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি প্রাণতোষ মণ্ডল বলেন, জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সুশীলসমাজ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সবাইকে শারদীয় দুর্গাপূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আমরা তিন স্তরের প্রাকপূজাকালীন, পূজাকালীন ও বিসর্জনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে মিটিং করে তাদের একটি দিকনির্দেশনা দিয়েছি। ১১ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত প্রত্যেকটা মণ্ডপে আমাদের পুলিশি নিরাপত্তা থাকবে। আর বিসর্জনটা যেন সুশৃঙ্খলভাবে হয় সে লক্ষ্যে প্রত্যেকটা স্থানে আমাদের পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে এখনো নির্দেশনা আসেনি। যেভাবে নির্দেশনা আসবে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সরকারি যে নির্দেশনাগুলো আছে সেগুলো ফলো করেই আমরা অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন করব।
শারদীয়া দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের মধ্য দিয়ে পূজারীদের মনে বিরাজ করবে মাতৃ আরাধনার অফুরন্ত শক্তি—এটাই কামনা মাদারীপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের।