মানত করা ষাঁড় জবাই করে মাংস বিক্রি!
মানত করে ‘আল্লাহর নামে’ ছেড়ে দেওয়া একটি ষাঁড় রাতের আঁধারে জবাই করার অভিযোগ উঠেছে পাঁচ কসাইয়ের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয় ওই পাঁচ কসাইদের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার রাতে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা শহরে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত পাঁচ কসাই হলেন মো. উজ্জ্বল হাওলাদার, মো. লালন হাওলাদার, মো. রুহুল আমিন, মো. মামুন ও মো. বিপ্লব।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে ‘আল্লাহর নামে’ ছেড়ে দেওয়া একটি ষাঁড় রাস্তা থেকে ধরে স্টিমারঘাট এলাকায় নিয়ে জবাই করেন অভিযুক্ত পাঁচ কসাই। ষাঁড়ের মাথা, চামড়া ও পা সুগন্ধা নদীতে ফেলে দিয়ে শুধু মাংস বাজারে নিয়ে যান। গতকাল বুধবার সকাল থেকে তারা ওই ষাঁড়ের মাংস বাজারে বিক্রি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কসাই জানান, কেউ যাতে ‘আল্লাহর নামে’ ছেড়ে দেওয়া ষাঁড়টি শনাক্ত করতে না পারে সেজন্য মাথা, চামড়া ও পা নদীতে ফেলে দেয়। ষাঁড়টিকে জবাই করে কেজিদরে প্রায় দেড় লাখ টাকার মাংস বিক্রি করেন তারা।
নিয়মানুযায়ী বাজারে গরু জবাই দিলে পৌর কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিয়ে সিল মেরে দেয়। কিন্তু ওই ষাঁড়ের গায়ে কোনো সিল দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন এ কাজে দায়িত্বরত পৌরসভার কর্মচারী মো. ফরিদুল ইসলাম।
এছাড়াও ষাঁড়টি জবাইয়ের আগে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছ থেকে পশুটি জবাইয়ের উপযোগী বলে সনদপত্র নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌরসভার কর্মচারী মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘ গতকাল তিনটি গরু জবাইয়ে জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে সিল দেওয়া হয়েছে। ষাঁড় জবাইয়ের বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি।’
নলছিটি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া মালিকবিহীন ষাঁড় জবাই করতে হলে প্রাণিসম্পদ বিভাগের ফিটনেস সনদ প্রয়োজন। একটি জবাই করলে আরেকটি ষাঁড় কিনে ছেড়ে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এসব নিয়ম না মেনেই ষাঁড়টি জবাই করে মাংস বিক্রি করা হয়েছে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে কসাই উজ্জ্বল ও রুহুল আমিন বলেন, ‘ওইদিন মোট চারটি গরু জবাই করা হয়েছে। জবাইয়ের সময় নলছিটি থানার পুলিশ কনস্টেবল ওয়াদুদ উপস্থিত ছিলেন। আমরা নিজেদের কেনা গরু জবাই করেছি।’
নলছিটির থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আহম্মেদ বলেন, ‘এ ঘটনায় উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন হাওলাদার একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’