মানহীন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বেকার তৈরির কারখানা : মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ব্যাঙের ছাতার মতো দেশের অনাচে-কানাচে গড়ে উঠছে মানহীন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। এসব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ন্যূনতম মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষক। এসব মানহীন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এক অর্থে বেকার তৈরির কারখানা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যাম্পাসে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার গুণগত মান যাতে আমরা রক্ষা করতে পারি, সেজন্য ন্যূনতম মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষকহীন কলেজগুলোর নিবন্ধন ও এমপিও দিতে আরও সতর্ক হতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে। আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের জন্য নতুন শিক্ষানীতি হয়েছে—সেটা বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে গিয়ে সক্ষমতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে, এটা আমি প্রত্যাশা করি।’
প্রধানমন্ত্রী আমাদের উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু আজকের যুবকরা উদ্যোক্তা হতে চায় না মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের একটা প্রবণতা হয়ে গেছে সরকারি চাকরি করা আর লেখাপড়া না করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা। সরকারি চাকরি ছাড়া অন্য কোনো চাকরিকে আমরা চাকরি মনে করি না। আমি মনে করি, এটা জাতির জন্য এলার্মিং। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে বেশি বেতন হলেও কম বেতনের সরকারি চাকরি নেওয়ার প্রার্থী বেশি। কারণ আমাদের ধারণা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো বেতন পেতে হলে কাজ করতে হবে। আর সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়া যায়, সেখানে কাজ না করেও বেতন পাওয়া যায়। তাই চাকরি প্রার্থীদের বেশিরভাগই সরকারি চাকরি খুঁজে বেড়ান। এই ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে, নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই আমাদের দেশ একদিন সোনার বাংলায় পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অত্যন্ত সফলভাবে তারা সারা দেশের অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়নসহ শিক্ষাপ্রশাসন পরিচালনা করছে। যদিও এই কাজ অত্যন্ত কঠিন ও চ্যালেঞ্জের। দেশের দুই হাজার ২৫৭টি কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা পর্ষদ গঠন, মান উন্নয়নসহ নানাবিধ কাজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সামলাতে হয়। তবে আমাদের দেশের সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কারিগরি শিক্ষা, কর্মমুখী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানো উচিত। কারণ এসব ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি সৃষ্টি হয়।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার ভুঁইয়া, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) ড. নাসিমা বানু, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) উপাচার্য প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।