মানিকগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী পলাতক
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে পরকীয়ারে জেরে স্বামীর হাতে প্রাণ দিতে হলো এক সন্তানের জননী মুক্তা আক্তারকে (২২)। আজ রোবাবার (১২ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পূর্বভাকুম গ্রামে বাবার বাড়িতে ওই গৃহবধূ তাঁর স্বামী রাজু বয়াতির (৩০) হাতে খুন হন ।
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, স্বামীকে গাজীগান গাওয়া নিষেধ ও অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় এই হত্যা কাণ্ডটি ঘটেছে।
নিহত মুক্তার বড় বোন সুচরিতা আক্তার জানান, তাঁরা দুই বোন। তাদের কোনো ভাই নেই। বাবাও মারা গেছেন। ছয় বছর আগে মুক্তার সঙ্গে একই উপজেলার ধল্যা চরউলাই গ্রামের পলাশ মিয়ার ছেলে রাজু বয়াতির বিয়ে হয়। তাঁদের ঘরে ৫ বছরের রিসান নামে একটি ছেলেও রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তাঁর বোন স্বামী রাজুকে গাজীর গান গাইতে মানা করে আসছিলেলন। এ ছাড়া রাজুর বিরুদ্ধে গোপনে একটি বিয়ের অভিযোগ রয়েছে। অন্য নারীদের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক থাকায় তাঁর বোনের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। তিন দিন আগে তাঁর বোন স্বামীর বাড়ি থেকে রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। গতকাল শনিবার রাতে বাবার বাড়িতে এসে রাজু জোর করে মুক্তাকে টেনেহিছড়ে নিয়ে যেতে চান। এ সময় র্যাবের সদস্যরা তা দেখে বিষয়টি মীমাংসা করার কথা বলেন। আজ সকালে তাঁর মা রৌশন আরা রাজুকে জানান, মুক্তাকে নিয়ে যেতে হলে তাঁর (রাজুর) পরিবারের অভিভাবকদের নিয়ে আসতে হবে।
সুচরিতা আক্তার জানান, দুপুর ২টার দিকে তাঁর মা গোসল করার জন্য বাড়ির বাইরে গেলে রাজু মুক্তাকে শ্বাসরোধ ও ধারালো ছুরি দিয়ে বুকে, পেটে আঘাত করে মোটরসাইল নিয়ে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁকে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণ করেন।
সিংগাইর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিবাস চক্রবর্তী জানান, উপচজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে বিকেল ৫টার দিকে তাঁদের জানানো হয় এ খুনের ঘটনা। মরদেহের সুরতাহাল করার সময় দেখা গেছে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। সন্ধ্যার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মুক্তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।