মানুষের পকেট কেটে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে : মির্জা ফখরুল
মানুষের পকেট কেটে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পাচার করা অর্থ ফেরাতে দায়মুক্তিই প্রমাণ করে—প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য নয়।’
সংসদে উত্থাপিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের প্রসঙ্গ টেনে আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল একথা বলেন। ঢাকা মহানগর বিএনপির দক্ষিণ ও উত্তরের যৌথ উদ্যোগে এই প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
ফখরুল বলেন, ‘বাজেটে কাদেরকে সাহায্য করা হয়েছে? যারা টাকা চুরি করল, ডাকাতি করল, লুণ্ঠন করল এবং লুণ্ঠন করে পি কে হালদারের মতো লোকেরা বিদেশে টাকা পাচার করল, তাদেরকে সাহায্য করা হয়েছে। তারা এখন সাত শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে বিদেশ থেকে টাকা ফেরত আনতে পারবে এবং এর বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না। তাদেরকে দুদক ধরবে না, হাইকোর্ট থেকেও তাদেরকে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার মানুষের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারী করে এদেশের অর্থনীতিকে, এদেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।’
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে সারের দাম বৃদ্ধি পাবে, প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়বে। অথচ, এদেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি।’
‘মানুষের জন্য এদের কোনো ভালোবাসা নেই’ মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বাজেটে দেখবেন—সবচেয়ে বেশি বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে জনপ্রশাসনে। জনপ্রশাসন কী? জনপ্রশাসন হচ্ছে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি-ইউএনও। আছেন সেক্রেটারি; যারা বসে আছেন সচিবালয়ে। ওদের বেতন বাড়াচ্ছে, ওদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়াচ্ছে। তাঁদের জন্য জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে তাদের বেতন-ভাতা বাড়াচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আর সময় ক্ষেপণের সময় নেই। আমাদের কথা খুব পরিষ্কার—পদত্যাগ করুন। পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। সংসদকে বাতিল করে দেন এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে জনগণের কাছে, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করে নতুন সরকার গঠন করুন।’
পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে যদি মিছিল-মিটিং করতে দেন, তাহলে আমাদেরকেও মিছিল-মিটিং করতে দিতে হবে। আর যদি সেখানে বাধার সৃষ্টি করেন, তাহলে জনগণই সেই বাধা প্রতিহত করবে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘আপনারা (পুলিশ) মানুষের ওপর অন্যায়-অত্যাচার করবেন না। বিনা কারণে মানুষকে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করবেন না, রিমান্ডে নেবেন না। এগুলোর একদিন না একদিন আপনাদের জবাবদিহি করতেই হবে।’
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, আমান উল্লাহ আমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, তাবিথ আউয়াল, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের মামুন হাসান, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য দেন।