মামলা থেকে নাসির-তামিমা’র অব্যাহতির বিষয়ে আদেশ আজ
ক্রিকেটার নাসির হোসেন এবং তাঁর স্ত্রী পরিচয় দেওয়া তামিমা সুলতানা তাম্মীসহ তিন জনের বিচারিক আদালতে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদনের আদেশ আজ।
শুনানি শেষে গত ২৪ জানুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ আদেশের দিন ধার্য করেন। সে সময় নাসির-তামিমার আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সেদিন শুনানিতে নাসির ও তামিমার আইনজীবী কাজী নাজিবুল্লাহ হিরু বলেন, ‘মাননীয় আদালত, তামিমা যথাযথভাবে রাকিবকে তালাক দিয়েছেন। তা কার্যকরের বিষয় কাজী অফিসের। নাসিরের সঙ্গে যখন তামিমার বিয়ে হয় তখন কাবিননামায় তালাকপ্রাপ্ত লেখেন তামিমা। রাকিবকে তামিমা তালাক দিয়েছেন এটা তাদের ব্যাপার। এখানে সুমি আক্তারের (তামিমার মা) কোনো ভূমিকা নেই। তাই মামলার দায় হতে সবাইকে অব্যাহতির আবেদন জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে, শুনানিতে রাকিবের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ‘ডিভোর্সের পরেও তামিমা-রাকিব একসঙ্গে থেকেছেন। আইনে আছে, যিনি তালাক দেবেন তিনি নোটিশ জারি করবেন। কিন্তু, তামিমা নোটিশ জারি করেননি, বরং ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করেছেন। এ ছাড়া তালাকের পর রাকিবের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করেছেন তামিমা। এ বিষয়ে তামিমার মা সব জানতেন। তাই, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে আবেদন জানাচ্ছি।’
এর পরে বিচারক এ বিষয়ে আদেশের জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারক যদি আসামিদের অব্যাহতি না দেন তাহলে মামলার বিচার শুরু হবে।
এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নাসির ও তামিমা ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে হাজির হয়ে জামিন পান। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর নাসির হোসেন এবং তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে এ মামলায় সমন জারির নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার তদন্তে ক্রিকেটার নাসির হোসেন, সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানবালা তামিমা সুলতানা তাম্মী এবং তামিমার মা সুমি আক্তারকে দোষী উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ডিভোর্স পেপার ছাড়াই অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে করা মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, তামিমা পেশায় একজন বিমানবালা। তিনি সৌদিয়া এয়ারলাইন্সে কর্মরত রয়েছেন। চাকরির সুবাদে তিনি ২০২০ সালের ১০ মার্চ সৌদিতে গিয়েছিলেন। মহামারির কারণে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময় ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাকিবের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হতো।
মামলায় বলা হয়, ‘চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার সঙ্গে ২ নম্বর আসামির (ক্রিকেটার নাসির) কথিত বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা বাদীর নজরে আসে। বাদী এ ধরনের ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান। পরবর্তীকালে পত্রিকায় এই বিষয়ে সংবাদ দেখে তিনি ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হন।’
এ ছাড়া তাঁদের গায়ে হলুদ ও বিয়ে পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যথাক্রমে গত বছরের ১৭ ও ২০ ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন হয়, যা এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। নাসির বাদীকে ফোন করে জানান যে সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার সঙ্গে তামিমা আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমার নাসিরকে বিয়ে করা, যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। আসামির সঙ্গে তিনি অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা নিকৃষ্ট ব্যভিচার।’
অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘আসামিদের এরূপ অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তাঁর শিশুকন্যা মারাত্মকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এমন কার্যকলাপে বাদীর চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা বাদীর জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’