মাসির দরদকে ব্যবহার করছে সরকার : রিজভী
র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আওয়ামী সরকারের অতি আদরের ধন মন্তব্য করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজকে সরকারের বিশেষ বাহিনী র্যাবের ওপর শক্তিশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর সরকার খুবই গোস্যা হয়েছে। তাদের মনে খুবই দুঃখ কষ্ট যে, কেন র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো? এখন নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছে নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য।
আজ বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে তামাই গ্রামে দরিদ্র মানুষের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য নাকি ভারত কাজ করবে। আসলে মায়ের চেয়ে মাসির দরদ যেমন বেশি, তেমনই আওয়ামী লীগ সরকার মাসির দরদকে ব্যবহার করছে র্যাবের নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, র্যাব দেশের অনেক অন্যায় ও মনুষ্যত্বহীন কাজের সাথে জড়িত। গুম খুন ক্রসফায়ারের সাথে জড়িত। এই গুম খুনের তালিকায় শুধু দেশের চোর ডাকাত নয়, দেশের সাবেক সংসদ সদস্যরা রয়েছেন। ছাত্রনেতা, যুবনেতা ও মানবাধিকার কর্মীও রয়েছেন। শুধু তাই নয়, এদেশের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, দিনের ভোট রাতে করাসহ সব অপকর্ম করেছে। সেই র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য এখন ভারতের কাছে ধরনা দিয়ে তদবির করা হচ্ছে। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। ওখানে কিছুটা হলেও আইনের শাসন আছে। নিশ্চয়ই র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের তদবির ভারত করবে না। বাংলাদেশের মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক র্যাবের নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য ভারত কাজ করবে এটা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। আর যদি করে তাহলে বুঝতে হবে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আলু পটলের চাইতেও কম দামে কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আগামীতে আরও একটি পাতানো নির্বাচন করার জন্য র্যাবকে কাজে লাগাতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ভারতের কাছে ধরনা দিচ্ছে সরকার। কারণ তারা ওই নির্বাচন করতে চায় যে, নির্বাচনে ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভরাট করা হবে। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবে না। তাই আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যন্ত আদরের ধন হচ্ছে র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একারণেই আওয়ামী সরকারের মাথা খারাপ হয়েছে। কেন র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এই সরকারের দিনক্ষণ শেষ হয়ে এসেছে। এ ধরনের অনাচারের সরকার এই বাংলাদেশে টিকতে পারে না। এটা ওলি আউলিয়াদের দেশ। মুক্তিযুদ্ধের রক্তস্নাত দেশ। এখনো অন্যায় অত্যাচার করে টিকে থাকা যায় না। দেশের মানুষ এই সরকারের গলায় গামছা দিয়ে মাটিতে পতন ঘটাবে ইনশাআল্লাহ।
রিজভী বলেন, দেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী কথায় কথায় উন্নয়নের কথা বলেন। তারা নাকি দোতলা ট্রেন করছে, উড়াল সেতু আর হাইওয়ে করছে। খালি উন্নয়নের গল্প। কিন্তু আপনারা সাধারণ মানুষের জন্য কি উন্নয়ন করেছেন? আজকে যে মেয়েটি ফুলবানু ফুল বিক্রি করে তার কি উন্নয়ন হয়েছে?
তিনি বলেন, বৃহত্তর পাবনা সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্প আজ বন্ধের উপক্রম। আবহমান বাংলার হাজার বছরের প্রাচীন এই তাঁত শিল্পের সুতা থেকে শুরু করে রং সকল উপকরণের দাম হু হু করে বেড়েছে। বিএনপির আমলে স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণ দেওয়া হতো। আপনারা করোনার অজুহাত দেন। কিন্তু সেই করোনার জন্য দেশের বাইরে থেকে টাকা তো আপনি লুটপাট করেছেন ঠিকই। ২৩ হাজার কোটি টাকা আপনি লুট করেছেন। যা কদিন আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথার মধ্যেই বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু আজকে তাঁতীদেরকে কেনো চড়া দামে সুতা ও রঙ কিনতে হবে? আসলে হাজার বছরের প্রাচীন এই শিল্পকে ধ্বংসের মহাপরিকল্পনা এঁকেছে সরকার। কারণ তাঁতীরা নিরন্ন ও দরিদ্র থাকুক। তাদের আয় উপার্জন কমে যাক। কিন্তু আপনার তো অসুবিধা নেই। কারণ আপনার ছেলে থাকে আমেরিকায়। আপনার মেয়েও থাকে বাইরে। তাদের তো টাকার অসুবিধা নেই। অসুবিধা হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষের।