মাসুম সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন : ডিবি
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগনেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ রোববার দুপুরে এ দাবি করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘গুলি করে দুজনকে হত্যার পর তার দুই বন্ধুর সহযোগিতায় নিরাপদ স্থানে আত্মগোপনে থাকেন মাসুম। ঘটনার পরদিন মাসুম তার সহযোগীদের নিয়ে জয়পুরহাট চলে যান। তারপর সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি পারেননি।’
এ কে এম হাফিজ আক্তার আরও বলেন, ‘সীমান্ত পাড়ি দিতে না পেরে তিনি সেদিন আবার বগুড়ার এক জায়গায় অবস্থান করেন। পরবর্তীতে বগুড়ার পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় আমরা আকাশকে গ্রেপ্তার করি।’
হাফিজ আক্তার বলেন, ‘গুলি করার সময় মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ জানতেন না, প্রীতি নামের কেউ মারা গেছেন কি না। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিকশায় থাকা প্রীতির নিহত হওয়ার কথা জানতে পারেন তিনি।’
মাসুমকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে হাফিজ আক্তার আরও বলেন, ‘শুটারের ধারণা ছিল যে, তিনি ধরা পড়বেন না এবং গ্রেপ্তারের পর তিনি অবাক হয়ে যান। তার নামে কয়েকটি হত্যা মামলাসহ আরও চার-পাঁচটি মামলা আছে বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন। আমরা সেগুলো এখনও ভেরিফাই করার সুযোগ পাইনি। টিপুকে হত্যার এ ঘটনা তিনি আমাদের কাছে সরাসরি স্বীকার করেছেন। আমরা তার কথা ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে মিলিয়েছি। আমাদেরও মনে হয়েছে, তিনিই মূল শুটার।’
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘তার সহযোগী কারা বা এ ঘটনার মোটিভ কী ছিল, তা জানার জন্য আমরা এখন তদন্তে নামব। এরপর তাকে আমরা রিমান্ডে নিয়ে বাকি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব এবং অস্ত্র উদ্ধারে নামব।’
এ কে এম হাফিজ আক্তার আরও বলেন, ‘পাঁচ দিন আগে মাসুম হত্যার কন্ট্রাক্ট পান। তিন দিন আগে কাকে হত্যা করতে হবে সেই নাম পান। তিনি আমাদের কাছে কিছু নাম বলেছেন। কিন্তু, তদন্তের স্বার্থে এখন আমরা কারও নাম বলছি না।’
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ আক্তার জানান, ‘মাসুম একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাফিকস ডিজাইনের ওপর পড়াশোনা করেন। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। তার বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। তার স্ত্রী-সন্তান আছে। মাসুম অপরাধজগতে জড়িয়ে একটি হত্যা মামলাসহ চার-পাঁচটি মামলার ফেরারি আসামি। এসব মামলা থেকে বাঁচিয়ে দেওয়াসহ নানা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা তাঁকে বলে এই হত্যার জন্য রাজি করানো হয়। তবে কারা তাকে ভাড়া করেছিলেন, সেই তথ্য সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
এটি রাজনৈতিক না কি সন্ত্রাসী কিলিং, এমন প্রশ্নে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আমরা তিন-চারটি বিষয়কে মাথায় রেখে কাজ করছি। এগুলো তদন্ত শেষে বলা যাবে। তার নামে কয়েকটি মামলা থাকার কারণে তিনি সব সময় হতাশায় ভুগতেন এবং তিনি ফেরারি বলে আমাদের জানিয়েছেন।’