মিতু হত্যা মামলার বিচারকাজ বিলম্বিত করছে একটি গোষ্ঠী : হাইকোর্ট
একটি গোষ্ঠী চট্টগ্রামে আলোচিত মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার বিচারকাজ বিলম্বিত করছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ সময় আদালত প্রশ্ন রেখে বলেন, তার পরিবারের কি বিচার পাওয়ার অধিকার নেই।
আজ মঙ্গলবার বাবুল আক্তারের দুই সন্তানকে শিশু আইন অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে করা আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি সাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে গত ১৪ মার্চ মাহমুদা খানম হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত স্ত্রী মাহমুদা খানম হত্যার ঘটনায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
২০২১ সালের ১২ মে পাঁচলাইশ থানায় এ মামলা করেন মিতুর বাবা। ওই দিন পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, দণ্ডবিধির ৩০২, ১০৯ ও ৩৪ ধারায় বাবুল আক্তারসহ আট জনকে আসামি করে দায়ের করা মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবিরুল ইসলামকে এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা (৪০), এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাইয়া (৪১), মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম (২৭), মো. আনোয়ার হোসেন (২৮), মো. খায়রুল ইসলাম প্রকাশ কালু (২৮), সাইদুল ইসলাম প্রকাশ সাকু (৪৫) ও শাহজাহান মিয়া (২৮)। তাঁদের মধ্যে সাইদুল ও শাহজাহান পলাতক।
বাবুল আক্তারের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন মামলা দায়ের শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে। তাই বাবুল আক্তারসহ আট জনকে আসামি করে মামলা করেছি। বাবুল আক্তারের সঙ্গে এক এনজিও কর্মীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় আমার মেয়ের সঙ্গে বাবুলের ঝগড়া হয়। মৃত্যুর আগে মিতু বিষয়টি আমাদের জানিয়েছিল। পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধানেরও চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি। বাবুল ও ওই নারী মিতুকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল।’
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মিতুকে। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু, মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন দাবি করে আসছিলেন, বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে তার মেয়ে মিতুকে খুন করা হয়েছে।