মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানিতে যা বললেন আইনজীবীরা
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ জনের জামিন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন এই আদেশ দেন। এদিন দুপুর ২টার দিকে জামিন শুনানির জন্য আদালত নির্ধারণ করেন ঢাকার সিএমএম রেজাউল করিম চৌধুরী।
এরপরে সিএমএম আদালতের দ্বিতীয় তলার ২৮ নং আদালত শুনানির জন্য নির্ধারিত হয়। দুপুর ২টার পর থেকে বিএনপির শতাধিক আইনজীবী আদালতের এজলাসে ভিড় করেন। এরপরে আদালতের এজলাস কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বিকেল ৩টায় বিচারক এজলাস গ্রহণ করলে বিএনপিপন্থী আইনজীবী জয়নুল আবেদন মাসুদ আহমেদ তালুকদার, বোরহানউদ্দিন সহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। এরপরে আইনজীবীরা জামিন শুনানি শুরু করেন। জামিন শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, মাননীয় আদালত এখানে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ জনের জামিন আবেদন করেছি। এই মামলায় এজাহার নামীয় ২ এবং ১০ নম্বর আসামি ইতোমধ্যে জামিন পেয়েছেন । এছাড়া এই মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস এজাহারনামীয় আসামি নন। তাঁদেরকে সন্দিগ্ধ হিসাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার দিন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নয়াপল্টনে গিয়েছিলেন, তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়। তাঁকে ঘটনার দিনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।
আইনজীবীরা আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একজন শিক্ষক ও সম্মানি ব্যক্তি। তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় আছেন। সহ-আসামি ও যে কোনো শর্তে আমরা তাঁর জামিন চাচ্ছি। সমাবেশকে কেন্দ্র করে এ মামলা দিয়েছে। এছাড়া, সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এবং বিজয়ের মাস ডিসেম্বর চলছে । তারা শহীদদের সম্মান জানাবেন।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু ও অ্যাডভোকেট আল মনসুর রিপন শুনানিতে বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস যে অসুস্থতার কথা বলেছেন, তারা অসুস্থতা নিয়েই বোমা ফাটানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া বিএনপির অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ বোমা উদ্ধার করা হয়েছে, যা মামলার জব্দ তালিকায়ও আছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, আসামিরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করার জন্য ও দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এই কার্যকলাপ করেছে। এই মুহূর্তে আসামিরা জামিন পেলে দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাবে। তাই আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে রাখা হোক। শুনানি শেষে বিচারক ২১৩ জন আসামির জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন ও বাকি ১১ জনের জামিনের আবেদনের আদেশ পরে দেওয়ার জন্য আদেশ দেন। এর কিছুক্ষণ পরেই বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সবার।
জামিন চাওয়া উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস ছালাম, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাবেক এমপি মো. ফজলুল হক মিলন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিব।
এর আগে গতকাল ফখরুলসহ বাকি নেতাদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার সিএমএম রেজাউল করিম চৌধুরী জামিন শুনানির জন্য আজ নির্ধারণ করেন।
গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীর সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পল্টন থানার উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। তবে এ মামলার এজাহারে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না।