মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় পিয়াসা রিমান্ডে
কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলায় মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী এই আদেশ দেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা স্বপন কুমার এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন মামলায় পিয়াসাকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। ওই দিন বিচারক ৩ অক্টোবর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
সরোয়ার আরও বলেন, রিমান্ড শুনানি উপলক্ষে আজ পিয়াসাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপরে তার উপস্থিতিতে মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখান বিচারক। এরপর বিচারক দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
এর আগে গত ১ আগস্ট রাজধানীর বারিধারার বাসায় অভিযান চালিয়ে মদ ও ইয়াবাসহ পিয়াসাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরের দিন গুলশান, ভাটারা ও খিলক্ষেত থানার পৃথক তিন মামলায় তার আট দিনের রিমান্ড দেন বিচারক। এরপরে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভাটারা ও খিলক্ষেত থানার মাদকের পৃথক দুই মামলায় পিয়াসার জামিন দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। তবে অন্য মামলায় জামিন না পাওয়ায় তিনি এখনো কারাগার থেকে মুক্তি পাননি।
কলেজছাত্রী মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে গত ৬ সেপ্টেম্বর বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ আটজনের বিরুদ্ধে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ নালিশি মামলা করেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। পরে আদালত এই মামলাটি গুলশান থানাকে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর, আহমেদ আকবর সোবহানের স্ত্রী আফরোজা সোবহান, আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা, শারমিন, সাইফা রহমান মিম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও ইব্রাহিম আহমেদ রিপনকে আসামি করা হয়েছে।
রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গত ২৬ এপ্রিল রাতে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান। এ মামলায় গত জুলাই মাসে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত গত ১৮ আগস্ট পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। আদালতের এই আদেশে মামলা থেকে অব্যাহতি পান আসামি সায়েম সোবহান আনভীর।
মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন আনভীর ও তাঁর স্ত্রী। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওই আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আনভীরের আবেদন নাকচ করে দেন। তবে তাঁর স্ত্রী সাবরিনাকে ছয় সপ্তাহের জামিন দেন।
শুনানিকালে আদালত বলেন, পোস্টমর্টেম রিপোর্টে চারটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই আপনারা পরে আসেন। এখন জামিন দিতে পারছি না। একজনকে (আনভীরের স্ত্রী) জামিন দিলাম। আরেকজনের নাম (আনভীর) কার্যতালিকা থেকে বাদ দিলাম।