মুরগি ও ডিমের বাজার গরম, ঘাম ঝরছে ক্রেতার
দুই-তিন দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে। এ সময়ের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ৩০ টাকা ও ডিম ডজনে ১০-১৫ টাকা করে বেড়েছে। আর এ অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
আজ শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, কারওয়ানবাজার, শনিরআখড়া, রামপুরা, বনশ্রী, বনানী, কাকলীসহ বিভিন্ন এলাকার বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৮৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে ডিমের ডজন ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা দরে।
কাওরানবাজারে খোকা মিয়া নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘মাসের প্রথমে বেতন পেয়ে আজ শুক্রবার বাজারে এসেছি। এখানে এসে তো দেখছি, জিনিসপত্রের দামে আগুন লেগেছে। মাসের বেতন না বাড়লেও বাজারের পণ্যের দাম বেড়েছে। কীভাবে সমন্বয় করবো? এই প্রশ্ন কাকে করবো ?’
খোকা মিয়া আরও বলেন, ’মাসে চার শুক্রবার পরে। প্রতি শুক্রবারে এক সপ্তাহের জন্য বাজার করি। বেতন পাওয়ার পর বাসা ভাড়া, ছেলে মেয়েদের স্কুলের খরচ ও যাবতীয় খরচ খাত ওয়ারী হয়ে যায়। এখন আমরা কীভাবে সমন্বয় করবো ? প্রতিটা পণ্যের দাম কম বেশি বেড়েছে। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামের তো খারাপ অবস্থা। এভাবে চলতে থাকলে আমিষ না খেয়ে থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মত সাধারণ জনগণের দিকে তাকিয়ে সরকারের নিয়মিত বাজারে জোর টহল ও অভিযান করা উচিত। তাহলে আমাদের মতো সাধারণ জনগন খেয়ে বাঁচতে পারবে।’
সামসু মিয়া নামের আরেক ক্রেতা বলেন, মাসে ১২ হাজার টাকা বেতন পান। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারীর কাজ করেন। তিনি বলেন, ’মুরগি বা বড় মাছ কিনে খাওয়ার ক্ষমতা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে ডিম খেতাম। ছেলে পড়ালেখা করে, তাকে ডিম দিতাম সপ্তাহে তিন দিন। এখন এই ডিমের দাম প্রায় ১৫০ টাকা ডজনে ঠেকেছে। আমরা কীভাবে খাবো? এইভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমাদের ডিম না খেয়ে থাকতে হবে ।’
ডিম ব্যবসায়ী হারুন মোল্লা বলেন, ডিমের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। তিনদিন ধরে এ দামবৃদ্ধি। আজকে এক রকম তো কাল আরেক রকম। প্রতিদিন ডজনে ৫ টাকা করে বাড়তি কিনতে হচ্ছে। জানিনা এ দাম কোথায় ঠেকবে। তবে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের লাভ খুব সীমিত। গোড়ায় দাম বাড়তি।
সবজি বাজার
এদিকে কাওরানবাজারের কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি পিস ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা আর গাজর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। নতুন আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ব্রুকলি প্রতি পিস ৩০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৫০ টাকা,বেগুন প্রতি কেজি ৫০ টাকা, মূলা প্রতি কেজি ৩০ টাকা, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় আর শসা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে করোলা আরও বাড়তি দামে প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি চলছে ১২০ টাকা এবং ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার
যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ান বাজারে মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকায় ও পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। এছাড়া শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ২৬০ টাকা, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, ছোট টেংরা ৫০০, বড় টেংরা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ এবং গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজার
গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।