মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই চলছে পাঠদান!
বিদ্যালয়ের ছাদ থেকে যখন তখন খসে পড়ছে পলেস্তারা। সেখানে ভেসে উঠছে রড। তারপরও যেন মাথা ব্যথা নেই কর্তৃপক্ষের। গত বৃহস্পতিবারও ঘটেছে পলেস্তারা ধসের ঘটনা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কক্ষটিতে ছিলেন না বলে রক্ষা। যদিও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান ‘খোঁজখবর নিয়ে’ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী ফল ঘোষণা হচ্ছিল। এ সময় অন্য একটি কক্ষের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। ঘটনার সময় কক্ষে কেউ ছিল না। তবে ওই কক্ষে অন্য সময় নবম শ্রেণির পাঠদান চলে।
ঘটনার পর ওই কক্ষটি পরিত্যক্ত রেখে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে পাঠদান।
অভিযোগ আছে, প্রায় সাত বছর ধরে ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবুও টনক নড়েনি কারও। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত। এরপর ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে তিন কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবনটি নির্মিত হয়। এর মধ্যে একটি কক্ষে নবম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়। যেটির পলেস্তারা ধসে পড়েছে। এই শ্রেণিকক্ষের পাশেই প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীদের অফিস কক্ষ। তার পাশেই ছাত্রী মিলনায়তন। বর্তমানে তিনটি কক্ষের অবস্থাই খুব নাজুক।
বছর দুয়েক আগে শিক্ষকদের অফিস কক্ষের পলেস্তারাও ধসে পড়েছিল। এ ছাড়া কক্ষগুলোর ফ্লোরও ভেঙে দেবে গেছে।
দুটি টিনশেডের ঘর থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এখানে চারটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও প্রয়োজন রয়েছে সাতটির। আর টিনের ঘরে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস করার মতো ভালো ব্যবস্থা নেই।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া ও মাহফুজ শেখ বলে, ‘গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় চলাকালীন জরাজীর্ণ ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। ওই কক্ষে আর পাঠদান হচ্ছে না, ঢুকতেও ভয় পাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন একটি ভবন করে দেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলমগীর গাজী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নতুন ভবন পাচ্ছি না। ভগ্নদশা ভবনটিতে পাঠদানসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস করতে ভয় করছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। আমাদের একটাই দাবি, নতুন একটি ভবন। আশা করছি সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘খোঁজখবর নিয়ে নতুন ভবন করতে যেসব প্রক্রিয়া রয়েছে, সে ব্যাপারে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করব।’