মেঘনায় গণডাকাতি, মুক্তিপণে ছাড়া পেলেন পাঁচ জেলে
ভোলার তজুমদ্দিনে মেঘনায় জেলেদের মাছ ধরার ট্রলারে গণডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ডাকাতরা অন্তত আটটি মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতি করে এবং পাঁচ জেলেকে অপহরণ এবং এসব ট্রলারের বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। পরে মুক্তিপণ দিয়ে অপহৃত জেলেরা ছাড়া পান।
অপহৃত জেলের আড়তদার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো শশীগঞ্জ স্লুইসঘাট এলাকার হারুন মাঝি, রুবেল মাঝি, শরীফ মাঝি, মাকসুদ মাঝি, নকিব মাঝি ও সফু মাঝি গতকাল রোববার দিবাগত রাতে মেঘনার বিভিন্ন এলাকায় মাছ ধরার জন্য জাল ফেলেন। গভীর রাতে মাছ ধরা অবস্থায় কিছু বুঝে উঠার আগেই আটটি জেলে ট্রলারে অতর্কিত হামলা চালায় জলডাকাতরা। এ সময় জাল, মাছ, নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসেট, সোলারসহ পাঁচ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে অপহৃত জেলেদের মোবাইল ফোন দিয়ে তাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আত্মীয়স্বজনরা কোনো উপায় না পেয়ে মুক্তপণ দিলে জলডাকাতরা আজ সোমবার ভোররাতে বোরহানউদ্দিন উপজেলার মির্জাকালু স্লুইসঘাটের দক্ষিণ পাশে পাঁচ জেলেকে নামিয়ে দেয়। অপহৃত পাঁচ জেলে হলেন মো. মাকসুদ, মো. হারুন, মো. নকিব, মো. সফু ও মো. রুবেল মাঝি।
আড়তদার মো. আলমগীর দর্জি জানান, ঈদকে সামনে রেখে মেঘনায় কয়েকটি জলডাকাত বাহিনী বেপারোয়া হয়ে উঠেছে। দুচারটি মাছ জালে ধরা পড়তে শুরু করায় এ অবস্থা। প্রায় প্রতিদিনই ডাকাতির কারণে জেলে ও মৎস্য আড়তদারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
এ ছাড়া একাধিক জেলে ও আড়তদার অভিযোগ করে বলেন, নদী এখন জলডাকাতদের নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ কিংবা কোস্টগার্ড কেউ তেমন অভিযান চালায় না। তারা উপরে থেকেই বলে আমরা নদীতে অভিযান চালিয়ে আসছি। তাদের উদাসীনতায় ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি আর জেলে অপহরণের ঘটনা ঘটছে। মেঘনায় মাছ ধরা অবাধ করতে প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি জানান তারা।
তজুমদ্দিনে কোস্টগার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. সুলতান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত মেঘনায় পেট্রল ডিউটি করি। গভীর রাতে মেঘনায় জেলে ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা শুনে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জিয়াউল হক বলেন, ‘ডাকাতির ঘটনা শুনেছি। তবে তজুমদ্দিনের মেঘনা কিনা, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’