মেট্রোরেল চালুর পর উত্তরায় বেড়েছে রিকশা-টেম্পুর ভাড়া
রাজধানীর আগারগাঁও থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ী পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুই মাস হলো। এই সময়ে মেট্রোরেল এলাকায় যাত্রীদের চলাচল বেড়েছে। সেইসঙ্গে ওই অঞ্চলের রিকশা ও টেম্পু চালকদের আয়ও বেড়েছে।
ফারুক হোসেন নামের এক রিকশাচালক এখন থেকে দুই মাস আগে দিনে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করতেন। এখন আয় করেন ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা। যদিও, এখন আগের চেয়ে সাংসারিক খরচ বেড়ে গেছে বলে জানান ফারুক।
উত্তরার দিয়াবাড়ী-খালপাড় এলাকায় ১৫ বছর ধরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালান ফারুক। গত শুক্রবার এনটিভি অনলাইনকে ফারুক বলেন, ‘গতকাল ১ হাজার ৬০ টাকা আয় করেছি। এখান থেকে ১৪০ টাকা ব্যাটারিচার্জ বাবদ খরচ হয়। দু-মাস আগে ৭০০-৮০০ টাকার বেশি আয় হতো না।’
ফারুক হোসেন আরও বলেন, ‘এ এলাকায় রিকশা চালাতে হলে প্রতিমাসে ১০০০ হাজার টাকা করে দিতে হয় কার্ডের জন্য। এ টাকা রাজনৈতিক নেতা থেকে অনেকেই ভাগ পায়। এ রোডে রিকশা চালাতে হলে টাকা দিতে হবে। নিধারিত এলাকার মধ্যে পুলিশ ধরলে ওরা এসে ছাড়িয়ে দেয়। যদিও মাঝেমধ্যে আমাদের জরিমানা গুণতে হয়।’
সবুজ মিয়া ১৭ বছর ধরে রিকশা চালান দিয়াবাড়ী-উত্তরা এলাকায়। তাঁর জন্ম উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরে। সবুজ মিয়া বলেন, ‘দু-মাস আগে মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আজমপুর পর্যন্ত রিকশা ভাড়া ছিল ৪০ টাকা। এখন সেটা ৬০ টাকা। এখন লোকজন বেড়েছে। দিয়াবাড়ীর খালপাড় থেকে পঞ্চকোটি পর্যন্ত ভাড়া ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এখন ভাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে হাউস বিল্ডিং পর্যন্ত রিকশার ভাড়া ৫০ টাকা ছিল, এখন ৮০ থেকে ৯০ টাকা।’
ফয়সাল নামের এক টেম্পুচালক বলেন, ‘উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ী স্টেশন নামে পরিচিত) থেকে হাউসবিল্ডিং পর্যন্ত টেম্পুতে ভাড়া ছিল ১০ টাকা। এখন ২০ টাকা। জসিমউদ্দিনের ভাড়াও একইভাবে বেড়েছে।’
তবে, রিকশাচালক মাসুম বিল্লাহ বলেন, এখন আগের চেয়ে টুকটাক ভাড়া বাড়লেও রিকশা আর টেম্পুর সংখ্যা বেড়েছে অনেক। অন্যদিকে আবার সব জিনিসের দাম বেড়েছে। আমি পরিবার নিয়ে ছোট্ট একটি বাসায় ভাড়া থাকি। মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে বাড়ি ভাড়া ১ হাজার টাকা বাড়িয়েছে। এ ছাড়া সব ধরনের খরচ বেড়ে গেছে।
টেম্পুচালক রফিক মিয়া বলেন, ‘আয় কম করি আর বেশি করি, ইঞ্জিনচালিত টেম্পু হওয়ায় প্রতিমাসে কার্ডের জন্য ১০০০ টাকা দিতে হয়। মাস শেষ হলে নতুন কার্ড দিয়ে দেয়। কোনো অসুবিধা হলে আয়নাল ভাই নামের একজনকে ফোন করলেই তিনি ছাড়িয়ে দিয়ে যান। তবে, গণ্ডির বাইরে গেলে আর ছাড়িয়ে দেন না।
কারা কীভাবে এই কার্ড প্রদান করেন সেই তথ্য অবশ্য জানাতে চাননি কোনো চালক। এমনকি কেউ কেউ কার্ডের কথা প্রথমে স্বীকার করলেও পরে অস্বীকার করেছেন।