মেয়ের জানাজা পড়লেন গুলিবিদ্ধ বাবা
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বাবার কোলে নিহত শিশু জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়ার (৪) জানাজা পড়িয়েছেন চোখে গুলিবিদ্ধ বাবা মাওলানা আবু জাহের।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় হাজীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্ব হাজীপুর গ্রামের মালেকার বাপের দোকান সংলগ্ন এলাকায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাসপিয়াকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহত শিশু তাসপিয়ার বাবা আবু জাহের বলেন, ‘মুহূর্তেই কী হয়ে গেলো নিজেও বলতে পারবো না। দোকান থেকে একটি জুস ও চিপস নিয়ে বের হচ্ছিলাম। তারপর সব শেষ।’
গতকাল বুধবার বিকেলে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে থাকা জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়া নিহত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয় শিশুটির বাবা সৌদি প্রবাসী মাওলানা আবু জাহের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব হাজিপুর গ্রামের রাশেদ মিয়ার বাড়ির আলম দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের বাদশার কাছে মাটি বিক্রি করেন। কিন্তু, বাদশা চুক্তির চেয়ে অতিরিক্ত মাটি কেটে নিতে চাইলে গত দুই দিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ঝামেলা হয়।
এক পর্যায়ে বুধবার বিকেলে বাদশা তার এলাকার রিমনসহ ৪-৫ জন বহিরাগত সন্ত্রাসীকে ভাড়া করেন।
সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলে এসে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় প্রবাসী জাহের ও তার কোলে থাকা মেয়ে তাসপিয়া গুলিবিদ্ধ হয়।
পরে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ঢাকা নেওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে কুমিল্লায় শিশু তাসপিয়ার মৃত্যু হয়।
এরপর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বেগমগঞ্জ মডেল থানার সামনের সড়কে তাসপিয়ার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্বজনরা। এ সময় তাঁরা তাসপিয়া হত্যার বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেন।
নিহতের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খুনিরা এর আগেও প্রকাশ্যে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ছিল। মাত্র চার বছর বয়সের শিশু তাসপিয়াকেও তারা গুলি করে হত্যা করল।
এ সময় বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনির আশ্বাসে স্বজনরা সড়ক ছেড়ে দেন।
ওসি জাহিদুল হক রনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছি।’