মোংলায় টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট
উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে মোংলা পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের পশু হাসপাতাল এলাকা ও সাত নম্বর ওয়ার্ডের বটতলা-শেহলাবুনিয়া এলাকার রাস্তাঘাট হাঁটু পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই ঘরের মধ্যে উঁচু চকি ও খাটে আশ্রয় নিয়ে আছেন। বন্ধ হয়ে গেছে রান্নার কাজ। ঘর ছেড়ে কেউ কেউ রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় এরকম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে পৌর শহরের মিয়াপাড়া, মুন্সীপাড়া, জয়বাংলা, কুমারখালী, মাকড়ঢোন, কেওড়াতলা, ইসলামপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায়। বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশনের খাল ও ড্রেনও তলিয়ে গেছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, অতিবৃষ্টিতে এখানকার প্রায় সাড়ে ৪০০ চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে ঘেরের বাগদা চিংড়ি ও সাদা মাছ। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে স্থানীয় চিংড়ি চাষিরা। দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, বেশি ক্ষতি হয়েছে চিলা, জয়মনি ও কামারডাঙ্গা এলাকার ঘেরগুলোতে।
পৌরসভার পশু হাসপাতাল রোড এলাকার বাসিন্দা সালমা বেগম ও রুমা আক্তার বলেন, রাস্তায়ও হাঁটু পানি, ঘরেও হাঁটু পানি। তাদের চুলা পানির নিচে, রান্না ও খাওয়াদাওয়া বন্ধ। খুব কষ্টে আছেন তাঁরা।
একই এলাকার আবদুল ওহাব ও তোফায়েল হোসেন বলেন, ড্রেন নাই, তাই পানি নামতে না পারায় রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। হাঁটুরও ওপরে পানি জমেছে। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খুব বিপদে আছেন তাঁরা। টয়লেটের কোনো ব্যবস্থা নেই। সবাই খাটের ওপরে বসে আছেন মালামাল নিয়ে।
দুজনই বলছেন, এমন বৃষ্টি আর এতো পানি আগে কখনও হয়নি। বন্যায়ও এতো পানি হয় না।
বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস বলেন, ‘এ ইউনিয়নের ছোট-বড় ৩০০ ঘের ও ২০০টির বেশি ঘরবাড়ি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে রয়েছে।’
এদিকে জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র শেখ আবদুর রহমান।