মোংলায় ভেসে গেছে হাজারও চিংড়ি ঘের, পানিবন্দি মানুষ
টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বাগেরহাটের মোংলা পৌর শহর ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। পৌরসভার চার-তৃতীয়াংশ এলাকা হাঁটু ও কোমর পানিতে ডুবে রয়েছে। অতিরিক্ত পানিতে তলিয়ে গেছে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন ও খাল। এ ছাড়া ভেসে গেছে হাজারও চিংড়ি ঘের।
এদিকে, ভাটার সময় খাল দিয়ে সামান্য পানি নামলেও অতিবৃষ্টিতে তা আবার বাড়ছে। প্রায় তিন থেকে চার ফুট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে ঘরবাড়ি।
জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে পৌরসভার পশু হাসপাতাল রোড ও কামারডাঙ্গা এলাকায়। ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় পশু হাসপাতাল রোড এলাকার কয়েকশ মানুষ সরকারি বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া পৌরসভার তিন, চার, সাত ও নয় নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা রয়েছে চরম দুর্ভোগে। পৌর মেয়র শেখ আবদুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, গতকাল বুধবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা ও ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার বিকেল থেকে আজ বৃস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত মোংলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, তিন দিনের বৃষ্টিতে যে পানি হয়েছে, ১৯৮৮ সালের বন্যায়ও এতো পানি হয়নি। তখন ঘরের খাট অবধি পানি ওঠেনি। এখন খাটের ওপরেও পানি উঠে গেছে। সব ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট পানির নিচে। রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। ঘরে থাকার উপায় নেই, তাই অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে।
পৌর মেয়র শেখ আবদুর রহমান বলেন, ‘পুরো পৌরসভা এখন পানির নিচে। স্মরণকালের বৃষ্টিতে যে জলাবদ্ধতা হয়েছে, তাতে এখন বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দুর্গতদের জন্য খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে দ্রুত পানি সরানোর কাজ করা হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘উপজেলার সর্বত্র বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সাত হাজার মানুষ। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে এক হাজার ঘেরের চিংড়ি ও সাদা মাছ। জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে যারা বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে, তাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’ পানিবন্দি মানুষ ও তলিয়ে যাওয়া ঘেরের সংখ্যা বাড়বে বলেও জানান তিনি।