মোংলায় মুক্তিযোদ্ধা ও সংখ্যালঘুদের চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগ
মোংলায় মুক্তিযোদ্ধা ও সংখ্যালঘুদের চিংড়ি মাছের ঘের লুটপাটসহ দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দখলদার প্রভাবশালীদের ভয়ে প্রশাসনে অভিযোগও দিতে পারছে না ভুক্তভোগীরা।
আজ বুধবার সরেজমিন উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খোনকারের বেড় মৌজায় ১৮০ একর জমি ২০ বছর ধরে মালিকদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শাহ আলী, মো. মিজান ও নুরুল আমিন বাগদা চিংড়ি চাষ করে আসছিলেন। ২০২০ সালে নতুন করে জমির মালিকরা লিজ না দিয়ে নিজেরা যৌথভাবে মাছ চাষ শুরু করেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওই ঘেরে ১৪ লাখ টাকার বাগদা চিংড়ির পোনা ছেড়ে মাছ চাষ শুরু করেন তারা। এরপর কিছু দিন গেলেই স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী যুবলীগনেতা ও মিঠাখালী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আরিফ ফকিরের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ওই চিংড়ি ঘেরের ওপর।
স্থানীয় বাসিন্দা জমির মালিক ও মিঠাখালী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. ওয়াদুদ শেখ, সোনাইলতলা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. সালাম ও জমির মালিক সংখ্যালঘু তুষার রায়, তিমির রায়, মিহির ও রমেন বালা অভিযোগ করে বলেন, গত ১২ জুন রাতে ইউপি সদস্য আরিফ ফকির, সাইফুল মোল্লা, আলম ফকির, আ. রহমান, রুস্তুম শেখ ও জোবায়ের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাদের চিংড়িঘেরে লুটপাট চালিয়ে প্রায় ৪০ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এরপর ঘেরটি ওই প্রভাবশালীরা স্থায়ীভাবে দখল করে নেয়। দখলের বিষয়ে কোথাও কোনো অভিযোগ করলে বাড়িতে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয় তারা। একই সঙ্গে বেশির ভাগ জমির মালিককে বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। এর ফলে ভুক্তভোগী জমির মালিকরা প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ করতে পারেনি।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. ওয়াদুদ শেখ বলেন, ‘দখলদার পাকিস্তানিদের হটিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। অথচ স্বাধীন দেশে আজ আমরা মুক্তিযোদ্ধারা নিজ জমি রক্ষা করতে পারছি না। সন্ত্রাসীদের কবল থেকে জমি আর জীবন রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান এই মুক্তিযোদ্ধা ও সংখ্যালঘু পরিবারগুলো।’
তবে চিংড়ি ঘের দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে মিঠাখালী ইউপি সদস্য আরিফ ফকির বলেন, ‘ওই ঘেরের মধ্যে তাদের মালিকানাধীন জমি আছে। তাই তারা ওই ঘেরে মাছ চাষ করছেন।’
এ বিষয়ে মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’