ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার ‘জেএমবির সদস্যেরা’ ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল : র্যাব
ময়মনসিংহে গতকাল শনিবার র্যাবের হাতে আটক হওয়া চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। র্যাবের সুবেদার মো. আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে শনিবার দিবাগত রাতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার চার জনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ রোববার তাঁদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ কামাল আকন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন—ময়মনসিংহের জুলহাস উদ্দিন কাদেরী (৩৪), মো. আলাল (৪৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোহাম্মদ রোবায়েদ আলম ও রংপুরের মো. আবু আইয়ুব (৩৬)। র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার চার জন জেএমবির সক্রিয় সদস্য। তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গোলাবারুদ, আটটি বোমা সদৃশ বস্তু, চারটি ব্যাগ, দরজা ও লক ভাঙার সরঞ্জামাদি, একটি মাটির চুলা ও একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে অভিযোগে দাবি করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা করেন র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
মামলায় উল্লেখ করে হয়েছে, গ্রেপ্তার করা ওই চার জঙ্গি ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে শনিবার ভোররাতে শহরের খাগডহর এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব-১৪-এর সদস্যেরা। পরে জঙ্গিরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গোলাগুলি শেষে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ওই চার জঙ্গিকে আটক করা হয়।
র্যাব বলছে, ওই জঙ্গিরা বিভিন্ন সময়ে লুট, ছিনতাই ও ডাকাতির মাধ্যমেও অর্থ যোগার করেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি ও লুটপাটসহ বিভিন্ন অর্থ ছিনতাইয়ের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির এহসার সদস্য। এই স্তরের সদস্যেরা বিভিন্ন জঙ্গি অপারেশনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে। তারা সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিল। এ বিষয়ে জামালপুরের একটি গোপন আস্তানায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা র্যাবকে জানায়, অপরাধমূলক কাজের জন্য বাছাইকৃত ১০ থেকে ১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ জঙ্গি দল গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহের কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও, স্বর্ণালঙ্কারের দোকান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে একটি টার্গেট নির্ধারণ করেছে তারা। জল ও স্থলপথের সমন্বয় ঘটিয়ে ঘটনাস্থলে আসার পরিকল্পনা করা হয়। তারা এখন অর্থ সংকটে পড়ে ডাকাতিসহ নানা অপরাধ করে চলেছে।