যেনতেন নির্বাচনের সক্ষমতা আ.লীগের নেই : গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আন্দোলন হোক আর না হোক, শেখ হাসিনাকে সরে যেতেই হবে। আমরা ঘুমিয়ে থাকি বা রাস্তায় না নামি, আর যেনতেনভাবে নির্বাচন করার সক্ষমতা আওয়ামী লীগের নেই।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আজ বুধবার ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে জাতীয় ঐক্য ও অবৈধ সরকারের পদত্যাগ আজ সময়ের দাবি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গয়েশ্বর এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তাঁর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে আলাপেরও কিছু নেই। প্রতিদিনই তো আলাপ হচ্ছে। উনি পদত্যাগ করলেই তো পারেন। তবে তিনি পদত্যাগ করলেই নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে, সেটারও গ্যারান্টি নেই। এ জন্য পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করতে হবে এবং সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপর যে সরকার হবে, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে—নির্বাচন কীভাবে হবে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘আগে সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করি, তারপর নির্বাচনকালীন সরকারের নাম ঠিক করা যাবে। আগে সন্তান ভূমিষ্ঠ হোক। পরে নাম ঠিক করা হবে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে চারিদিকে অনেক ধরনের ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশের আকাঙ্খিত ঘটনা এখনো ঘটেনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমাদের আগ্রহ ছিল না। সেসময় নানাভাবে চাপ দেওয়া শুরু হয়। পরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভাবলেন, ক্ষমতায় কে আসবে আসুক, কিন্তু দেশকে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়াটা বন্ধ হবে। তবে সেটি হয়নি। সেসময় আমি প্রথম দুই নেত্রীর মুক্তি চাই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা কিন্তু শেখ হাসিনার মুক্তি চায়নি। সেই আওয়ামী লীগ নিয়েই রাজনীতি করছেন শেখ হাসিনা। আমাদের নেতা তারেক রহমান শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে গিয়েছিলেন। অথচ, আজকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার থাকবে কি না, সেটা নিয়ে টানাটানি।’
শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জনগণের মনে যে ক্ষোভ, সেটারই প্রতিফলন ঘটেছে। রাজাপাকসের পরিবারের দমন পীড়ন ও লুটের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে সেখানকার মানুষ। তেমনই বাংলাদেশের অবস্থা। এখানেও চলছে লুটপাট আর ক্ষমতার অপব্যবহার।’
মাথাপিছু গড় আয়ের সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘মাথাপ্রতি ব্যয়ের কথা বলছেন না কেনো? আগামীতে ঋণের সুদের টাকা পরিশোধ করতে গেলে বোঝা যাবে—কী হবে? এখন চালের সের ১০০ টাকা হলে দুই বছর পর চালের সের হবে ৩০০ টাকা। গণতন্ত্র তো উন্নয়নের বাধা না। বরং, জনগণকে নিয়ে করেন। দেশে দুর্নীতি কিন্তু শতভাগ হচ্ছে। এক টাকার জিনিস ৫ গুণ বাড়ানো হচ্ছে। পদ্মা সেতুর দুই পাশে জমি অধিগ্রহণ করার নামে কতো টাকা লুট করা হয়েছে, খোঁজ নিলেই জানা যাবে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘সরকারের পতন হলে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেব রাষ্ট্র সংস্কার কীভাবে করা যায়। আগে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামি। রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। আজকে খালেদা জিয়ার সাজা আইনসিদ্ধ না। এটা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তা না হলে হাজী সেলিম কেমনে বিদেশ যায়?’
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আলোচনা সভার আয়োজন করে। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমদ খানের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন, গণ-অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জুসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতারা।