যেভাবে ভ্রমণ করবেন মেট্রোরেলে
রাজধানীর বুকে যাত্রী নিয়ে চলবে স্বপ্নের মেট্রোরেল। আজ সকালে এই স্বপ্ন যাত্রার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন শেষে তিনি মেট্রোরেলে উঠবেন। আর এরপর থেকেই যাত্রী চলাচল শুরু করবে মেট্রোরেল।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। টিকেট, স্টেশনে প্রবেশ-বাহির, ওঠা-নামা, এমআরটি কার্ড রিচার্জ ইত্যাদি কাজের মহড়া চলছে। তারা বলছেন, দেশের সাধারণ মানুষ এ ধরনের পরিবহনে যাতায়াত করতে অভ্যস্ত নন। তাদের চলাচলে সুবিধার্থে ভিডিও টিউটোরিয়াল, মাইকিংসহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মেট্রোরেলে উঠতে যা করতে হবে
মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনই তিন তলা। প্রথম তলা পেরিয়ে দ্বিতীয় তলায় রয়েছে কর্মকর্তাদের অফিস কক্ষ, টিকিট কাউন্টার এবং ওয়েটিং রুম। এটাকে বলা হয় ‘কনকর্স লেভেল’। এখান থেকেই টিকিট সংগ্রহ করতে হবে।
গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য টিকিট কাটার দু’টি পদ্ধতি রয়েছে সিঙ্গেল বা একক ও পারমানেন্ট। টিকিট সংগ্রেহর আগে যাত্রীকে প্রথমে মনিটরে ভাষা নির্বাচন করতে হবে। ইংরেজি ও বাংলা দু’টি ভাষা রয়েছে, যে ভাষায় আপনি স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করবেন সেটা নির্বাচনের পর একক বা পারমানেন্ট (এমআরটি পাস) নির্বাচন করতে হবে। এরপর আসবে গন্তব্যের তালিকা। কোন স্টেশন পর্যন্ত কত ভাড়া সে তালিকা থাকবে। সেখান থেকে যাত্রীকে গন্তব্য স্টেশন নির্বাচন করতে হবে। এরপর কয়টি টিকিট সংগ্রহ করবেন সে তালিকা আসবে। এরপর প্রয়োজনীয় টিকিট, গন্তব্য স্টেশন নির্বাচন করে “ওকে” বাটকে টাচ করলেই মেশিন টাকা দিতে বলবে। টাকা দেওয়ার পর টিকিট বা এমআরটি পাস বেরিয়ে আসবে। এই পদ্ধতি অনুসরন করে মেট্রোরেলের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। একজন যাত্রী একবারে ৫টির বেশি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন না।
অন্যদিকে, এমআরটি পাস পদ্ধতিতে একটি স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে যতবার খুশি যাতায়াত করা যাবে। তবে সেক্ষেত্রে কার্ডটি সময়মতো রিচার্জ করে রাখতে হবে। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করে নিতে পারবেন। প্রত্যেক মেট্রো স্টেশনে থাকা টিকিট ভেন্ডরের মেশিনের মাধ্যমেই রিচার্জ করা যাবে। টিকিট সংগ্রহ করে যেতে হবে তৃতীয় তলায়।
যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে তিন ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে প্রতিটি স্টেশনে। সিঁড়ি, এস্কেলেটরের পাশাপাশি বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য রাখা হয়েছে লিফট। দ্বিতীয় তলা থেকে টিকিট সংগ্রহ শেষ করে সিঁড়ি বা লিফটের মাধ্যমে পৌঁছাতে হবে তৃতীয় তলায়। টিকিট চেকইনের বিষয়টি দ্বিতীয় তলাতেই শেষ করা হবে। টিকিট চেক হবে ডিজিটালি। সেখানে কোনো কর্মীর প্রয়োজন হয় না। যদি কেউ না পারেন তাহলে নিরাপত্তা কর্মীরা যাত্রীদের সহযোগিতা করবেন।
তৃতীয় তলাতেই মেট্রোর মূল প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট সময় পর পর ট্রেন এসে থামবে। অটোমেটিক দরজা খুলে যাবে। যাত্রীরা নামবেন, আপনি উঠবেন। গন্তব্য স্টেশনে ট্রেন থামলে যাত্রীরা এমআরটি পাস পাঞ্চ করলেই দরজা খুলে যাবে এরপর বেরিয়ে যেতে পারবেন। সিঙ্গেল এন্ট্রির কার্ডে ভ্রমণের মেয়াদ একবার। আর দশ বছর মেয়াদি কার্ডের যাত্রীরা বার বার ভ্রমণ করতে পারবেন। ভ্রমণের দূরত্বে ভাড়া অনুযায়ী অটোমেটিক টাকা কেটে নেবে।