যে কারণে বাড়ছে ডিমের দাম ও উৎপাদন খরচ
‘ঈদের পর থেকে ডিমের দাম বেড়ে গেছে। অনেক চাষি মুরগির ফার্ম ছোট করছেন। কারণ, ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য মুরগির খাবারের দাম বেড়ে গেছে। ফলে, বেশি দামে চাষিরা ডিম বিক্রি করতে পারছেন না।’
আজ শনিবার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে একথা বলছিলেন রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন।
দেশের বিভিন্ন এলাকার ডিম চাষিদের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ডিম কেনেন আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এমনিতেই অন্যান্য সময়ের চেয়ে অন্তত ১০ শতাংশ কম ডিম উৎপাদিত হয় এ সময়। ফলে, সরবরাহ কম থাকে। ফলে রোজার সময় কম থাকলেও ঈদের পর থেকে বাড়তে শুরু করেছে।’
এ তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেল আরও কয়েকটি ডিমের আড়তে গিয়ে। মেসার্স নাসির ব্রাদার্স নামে একটি ডিমের আড়তে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে লাল ডিম ১০০ পিস বিক্রি করছি ৯১০ টাকা দরে। লাল ডিমের মধ্যে ছোটটা আবার ৮৮০ টাকায় আর ১০০টি সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছিল ৮৫০ টাকায়।
আড়তের মালিক নাসির আহমেদ বলেন, ‘একটি ডিম উৎপাদন করতে বর্তমানে খরচ হচ্ছে সাড়ে সাত টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গম ও ভুট্টার দাম বেড়েছে। এসব খাবারই মুরগির প্রধান খাবার। ফলে, খরচ বেড়েছে ডিম উৎপাদনের। তাই বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে।’
কারওয়ান বাজারের মুরগির বাজারে ঢুকে দেখা যায়, ডিমের হালি ৪০ টাকা ও ডজন ১২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ, ডিমপ্রতি ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শাহানুর নামের একজন খুচরা ব্যবসায়ী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সবকিছুর দামই বাড়ছে, সেখানে ডিমের দাম বাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। আমরা কিনছি প্রায় সাড়ে ৯টাকা করে। ফলে ১০ টাকার কমে বিক্রি করতে পারি না।’
কারওয়ান বাজারে ডিমের ক্রেতা আবু তাহের রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। থাকেন রাজাবাজারের একটি মেসে। মেসে প্রতিদিন ডিম লাগে। ফলে, অনেক ডিম কিনতে হয়। রাজাবাজারে সাড়ে ১০ টাকা করে বিক্রি হতে দেখে তিনি চলে এসেছেন কারওয়ান বাজারে। আবু তাহের বলেন, ‘যা কিনতে যাই, তার দামই বেশি। এত খরচ কুলিয়ে ওঠা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে। এ ছাড়া প্রায় সব সবজির দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। অন্যদিকে দাম কমেছে পেঁয়াজের। কেজিপ্রতি প্রায় ১০টাকা দরে দাম কমেছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৪৫ টাকা কেজি। আজ তা ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এক সপ্তাহ আগে টমেটোর দাম ছিল ৪০ টাকা। আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে গাজর বিক্রি হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আজ শনিবার তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে। যদিও দু-সপ্তাহ আগে গাজর ১০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে শসার দাম ছিল কেজি ৩০ টাকা। কোথাও কোথাও বা শসা ভেদে আরও কম। আজ শনিবার ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতেও শসা বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া পিসপ্রতি ফুলকপি ৩০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, ঢেঁড়স ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও বেগুন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এসব সবজির দাম গত সপ্তাহেও একই রকম ছিল।