রংপুরে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ পরিচালক ওয়ালিউর রহমান আকন্দের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার অফিসের তিন তলায় তাঁর থাকার ঘরের সঙ্গে বাথরুম থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও প্রকৃত বিষয়টি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদেনর পর জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী গাড়িচালক আবুবকর সিদ্দিক বলেন, ‘সোমবার সারা দিনই অফিস করেছেন তিনি। কোথাও যাননি। বিকেল সাড়ে ৫টায় আমি স্যারকে বলি গাড়ি বের করব কি না। তখন তিনি বলেন, গাড়ি গ্যারেজ করো।’
সিদ্দিক আরও বলেন, ‘স্যার, এরপর তিন তলায় তাঁর থাকার রুমে চলে যান, আর আমি বাড়ি যাই। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্যার অফিস কক্ষে না এলে, আমাকে অফিসের বড় বাবুরা স্যারের খোঁজ নিতে বলেন।’
সিদ্দিক বলেন, ‘বড়বাবুদের কথায় আমি অফিসের পিয়ন বদি ভাইসহ তিন তলায় গিয়ে দেখি কলাপসিবল গেট লাগানো কিন্তু, তাতে তালা লাগানো নেই। আমরা খুলে গিয়ে স্যারের রুমের দরজার সামনে গিয়ে দেখি দরজা বন্ধ। তখন ডাকাডাকি করি। কিন্তু, কোনো সাড়া পাই না। পাঁচ থেকে সাত মিনিট পর আবার ডাকাডাকি করি। কিন্তু, সাড়া না পাওয়ায় ঘরে ঢুকি। এরপর দেখি, বিছানায় মশারি দেওয়া। কিন্তু, তিনি নেই। বাথরুমের দরজা খোলা। জুতা বাইরে। সেখানে উঁকি দিতেই দেখি, স্যার গামছা দিয়ে শাওয়ারের সঙ্গে ঝুলে আছেন।’
পিয়ন বদিউজ্জামান বলেন, ‘ড্রাইভারসহ মরদেহ দেখেই আমরা নিচে এসে অফিসারকে জানাই। তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। স্যার খুব ভালো মানুষ ছিলেন। সব সময় আমাদের সঙ্গে হাসিখুশিভাবে কথা বলতেন।’
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, ‘সোমবার অফিসে অনেক সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওনাকে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। বুধবার মিটিং করার কথাও রয়েছে।’
এনামুল বলেন, ‘ওনি অফিসের ওপরেই থাকতেন। স্যার সাধারণত ৯টার মধ্যে অফিসে আসেন। কিন্তু, সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অফিসে না আসায় আমি পিয়ন এবং ড্রাইভারকে স্যারের রুমে যেতে বলি। তাঁরা গিয়ে এই ঘটনা দেখে আমাকে জানালে পুলিশে খবর দিই।’
খবর পেয়ে সেখানে আসেন ওয়ালিউরের ভাই শাহজাদা। তিনি বলেন, ‘ভাই ভাল মানুষ ছিলেন। ভাতিজা ভাতিজি ভাবিসহ বগুড়ায় বাসা করে সেখানে থাকতেন। আমি খবর পেয়ে এসে দেখি, ভাই বাথরুমে ঝুলে আছে। বিষয়টি আমরা মানতে পারছি না। ভাই কেন এভাবে আত্মহত্যা করবেন বুঝতে পারছি না।’
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, তিনি অফিসের ওই রুমেই থাকতেন। বিষয়টি আমরা নিবিড়ভাবে তদন্ত করছি। ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু সেটি খতিয়ে দেখা হবে।’