রাজধানীতে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
রাজধানী ও এর আশপাশের কয়েকটি এলাকায় হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এ অবস্থায় ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একইসঙ্গে ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগ সচেতন রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ সতর্কতার কথা বলা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বুলেটিনে ডায়রিয়া সম্পর্কে আলাদা করে বক্তব্য রাখেন।
আইসিডিডিআর,বি কর্তৃপক্ষ বলছে, গত ১২ দিনে হাসপাতালটিতে ১৩ হাজার ৪৮৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।
রোববার দুপুরে আইসিডিডিআর,বি’র মিডিয়া ম্যানেজার তারিফ হাসান বলেন, ‘প্রতিদিনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি মুহূর্তেই নতুন নতুন রোগী এসে ভর্তি হচ্ছেন। আবার অনেকে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। দৈনিক এক হাজারের বেশি মানুষ ডায়রিয়া নিয়ে আমাদের হাসপাতালে আসছেন।’
তারিফ হাসান জানান, গত ১৬ মার্চ এক হাজার ৫৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ১৭ মার্চ আরও এক হাজার ১৪১ জন রোগী ভর্তি হন। এরপর যথাক্রমে ১৮ মার্চ এক হাজার ১৭৪ জন, ১৯ মার্চ এক হাজার ১৩৫ জন, ২০ মার্চ এক হাজার ১৫৭ জন, ২১ মার্চ এক হাজার ২১৬ জন, ২২ মার্চ এক হাজার ২৭২ জন, ২৩ মার্চ এক হাজার ২৩৩ জন, ২৪ মার্চ এক হাজার ১৭৬ জন, ২৫ মার্চ এক হাজার ১৩৮ জন, ২৬ মার্চ এক হাজার ২৪৫ জন এবং আজ ২৭ মার্চ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৫৩৯ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, শনির আখড়া, মোহাম্মদপুর, টঙ্গী ও উত্তরা থেকে বেশি রোগী আসছেন।
এদিকে, ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একইসঙ্গে ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগ সচেতন রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
ডায়রিয়ার প্রকোপ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বাড়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনকার কাজকর্মে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করলে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং সবসময় সুপেয় পানি পান করলে ডায়রিয়া রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালগুলোতে খাবার স্যালাইন, আইভি ফ্লুইড স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সরবরাহ রয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।’