রাজধানীর ড্রেনের পানিতে করোনাভাইরাসের জীবাণু
রাজধানী ঢাকায় পয়োনিষ্কাশনের ড্রেনের পানিতে এবং কর্দমাক্ত স্থানে করোনাভাইরাসের জীবাণুর অস্তিত্ব মিলেছে। তবে, আশার কথা হলো, আমরা নিশ্চিত হলাম ঢাকা ওয়াসার পানিতে করোনার জীবাণু নেই। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর, বি) ও ঢাকা ওয়াসার করা এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
আজ সোমবার রাজধানীর ওয়াসা ভবনে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ঢাকা ওয়াসার পাগলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, নারিন্দা, বাসাবো পয়োপাম্পিং স্টেশন, ঢাকা শহরের ভূ-পৃষ্ঠের পানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি পুকুর, মিরপুর মাজার পুকুর এবং বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর পানি নমুনা হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, ওয়াসার পরিশোধিত পানিতে ভাইরাসটির কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে ঢাকা শহরের পুকুর ও নদীর পানিতেও মেলেনি করোনার জীবাণু।
গবেষণা বলছেল—৫৬ শতাংশ ড্রেনের পানি ও ৫৩ শতাংশ কর্দমাক্ত স্থানে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে ‘ঢাকা শহর এবং এর আশপাশে সার্স কোভ-২ এর উপস্থিতির জন্য পয়োনিষ্কাশন এবং অন্যান্য দূষিত পৃষ্ঠের পানি এবং শোধিত পানির উৎস’ শীর্ষক এই গবেষণার কাজ সম্পন্ন হয়। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন আইসিডিডিআর, বি’র ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. সিরাজুল ইসলাম।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেন, ‘শুধুমাত্র গতানুগতিকভাবে এই গবেষণা চালানো হয়নি, প্রকৃত অবস্থা তুলে আনতেই গবেষণাটি চালিয়েছি। করোনার সময়ে জীবন ও জীবিকা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হাত ধোঁয়ার বিষয়টি দেখেছি। একই সঙ্গে আমাদের পানিতে করোনার কোনো অস্তিত্ব আছে কি না? সেটি দেখতে আইসিডিডিআর,বি’র সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণাটি করা হয়। আশার কথা হলো, আমরা নিশ্চিত হলাম ঢাকা ওয়াসার পানিতে করোনার জীবাণু নেই।’
এদিকে, ওয়াসার পানিতে করোনার অস্তিত্ব না পাওয়া গেলেও করোনার সঙ্গে অন্যান্য কোনো ভাইরাস যাতে ওয়াসার পানিতে না থাকে, সেই ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি পরামর্শ দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখনো কিছু কিছু পানিবাহিত রোগ আছে। ঢাকায় যেসব পুরোনো পাইপ লাইন ছিল, সেগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে। একটা এলাকায় যদি ২ হাজার মানুষ থাকে, সেখানে ২-৪ ইঞ্চি লাইন বসানো হয়েছে। কিন্তু, পরবর্তীতে সেখানে ২০ হাজার লোক হয়ে যায়। তাই, এসমস্ত এলাকা চিহ্নিত করে তেমন পাইপ লাগাতে হবে।’
‘ওয়াসা যে পানি পরিশোধন করে, সেটা শতভাগ নিরাপদ’ উল্লেখ করে তাজুল বলেন, ‘পানি যে পাইপলাইন দিয়ে যায়, সেগুলোতেই সমস্যা হয়ে থাকে। একই সঙ্গে জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে।’