রাজধানীর বাসস্ট্যান্ডে কেটেছে তাদের ৩ রাত!
মোল্লা মোহাম্মদ আবুল। বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানার দুই নম্বর পঞ্চকরণ ইউনিয়ন থেকে এসেছেন রাজধানীতে। উদ্দেশ গণসমাবেশ।
জটিলতার কথা ভেবে এলাকার ‘মোল্লা ভাই’ ৬ ডিসেম্বর পৌঁছান ঢাকায়। পঞ্চকরণ ইউনিয়ন যুবদলের এই সহসভাপতি রাজধানীতে এসে এ কয়দিন কাটিয়েছেন সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে। কারণ, তার হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। কিন্তু, সমাবেশে যেকোনো মূল্যে থাকতে চান। তাই কখনও বাসের মধ্যে, কখনও বা ভ্যানের ওপর শুয়ে রাত কাটিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।
মোল্লা ভাই এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর ঢাকায় এসেছি। কারণ, ভেবেছিলাম সরকার সব বন্ধ করে দেবে। কাছে টাকা ছিল না বলে এভাবে কাটিয়েছি। আজ আমার ছেলে আসছে। ছেলে সাইফুল ইসলাম রানা ইন্টারমিডিয়েটে পড়ে। সে আরও কয়েকজন নিয়ে ঢাকার পথে।‘
পরে মোল্লা মোহাম্মাদ আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতারা হুমিক-ধামকি দিয়েছেন। জানি না, বাড়ি গেলে কি হবে।’
মোহাম্মদ লাবলু ফরাজি। যিনি বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানার দুই নম্বর পঞ্চকরণ ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি। তাঁর দাবি, তিনি ১২ অক্টোবর বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে বাড়ি ছেড়েছেন। তারপর আর বাগেরহাট ফিরে যাননি। এ সময়ের মধ্যে তিনি বিএনপির সব বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
মোহাম্মদ লাবলু ফরাজি বলেন, ‘দুটি জামা ও দুটি প্যান্ট কিনে বাসা থেকে ১০ অক্টোবর বের হয়েছি। তারপর থেকে এগুলোই পরছি। যে বিভাগে যাচ্ছি, সেখানেই থাকছি কয়েকদিন। সেখানে খাচ্ছি-দাচ্ছি-ঘুমাচ্ছি আর কাপড়-চোপড় ধুচ্ছি।’
শুধু মোল্লা ভাই বা লাভলু ফরাজি নয়, এমন আরও হাজার হাজার মানুষ ঢাকার গণসমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন কয়েকদিন আগে থেকেই। এই যেমন, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা থেকে মাহমুদ হাসান এসেছেন গত ৭ ডিসেম্বর। এ কয়েকদিন তিনি রাজধানীর একটি আবাসিক হোটেলে ছিলেন। মাহমুদ বলেন, ‘যেকেনো মূল্যে এ সমাবেশ সফল করতে চেয়েছি। বাকিটা আল্লাহ জানেন।’
ঢাকার বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দিতে যারা আগে থেকে ঢাকায় আসেননি, তারা আজ আসার চেষ্টার করছেন। আগামীকাল সমাবেশে যোগ দেবেন তারা।
এদিকে, সড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ। যেকেনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছে। কাউকে সন্দেহ হলে তাঁর কাছে থাকা ব্যাগ চেক করছেন। এমনকি, মুফোফোনও চেক করছেন।