রাজনীতির সঙ্গে পেশাজীবীদের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ : আমীর খসরু
রাজনীতির সঙ্গে পেশাজীবীদের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা কাজে লাগাতে পারলে রাজনীতিতে নতুন ডাইমেনশন আসবে। আমাদের জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশের বয়স ৩০ বছরের নিচে। এদের মধ্যে চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে পারলে আগামীর বিশ্বে বাংলাদেশ সমকক্ষ হবে। ২৭ দফার টার্গেট এই ৬৫ শতাংশ মানুষ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সিলেট শহরের দরগাহ গেট এলাকায় একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকেলে বিএনপি ঘোষিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ শীর্ষক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণমূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ যে গর্তে পড়েছে, তা থেকে তুলে আনার জন্য ২৭ দফা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনাসহ অনির্বাচিত কিছু লোক দেশ দখল করে আছে, তারা রেজিম, সরকার নয়। তারা দেশ ছেড়ে চলে গেলে কোন পথে যাবে বাংলাদেশ, তার রূপরেখা ২৭ দফা।’
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে যেখানে নেওয়া হয়েছে, তাতে মেরামত জরুরি। তারা রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ একটা গোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নেয়, কারা ব্যবসা করবে, কারা কারা চাকরি করবে। বাংলাদেশের সংবিধানকে দলীয় দলিল করেছে তারা। দল, পরিবার ও ধারাবাহিক ক্ষমতা দখলের জন্য সংবিধানকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। সংবিধান পরিবর্তন করে করেছে তিন ভাগের এক ভাগ পরিবর্তনশীল নয়। যেখানে তাদের সুবিধা, সেখানে পরিবর্তন করা যাবে না। সংসদীয় গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলো তারা পরিবর্তন করে দিয়েছে। যাতে ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচন করতে পারে।’
‘বাংলাদেশে মুক্তবাজার অর্থনীতি নেই, চলছে পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি’ মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার যাদের পৃষ্টপোষকতা করে, তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছে। অন্যরা তা পারছে না।’
‘দেশে আইনের শাসন না থাকায় গুম-খুনের বিচার হচ্ছে না’ দাবি করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, জনসমাগম করে সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব নয়। এ অবস্থায় বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থেকে সরে আসছে। আমরা চাই না—সরকার কর্তৃক কেউ খুন, গুমের শিকার হোক।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্বাচনে পুলিশ দিয়ে মারধর করে, তারা ফলাফল নিয়ে যায়। এ ঘটনা শেখ হাসিনার কফিনে শেষ পেরেক। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা জানিয়ে দিলেন দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতিসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন প্রধানমন্ত্রী। একজনের নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্র ব্যবস্থা। রাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী একক ক্ষমতা চালাচ্ছেন। রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখায় এটা নেই। ক্ষমতায় সামঞ্জস্য আসবে। পার্লামেন্টের এটা কালেকটিভ সিস্টেম।’
এ সময় আলোচনায় অংশ নেন সিলেটের বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।