রাজশাহীর বিতর্কিত পৌরমেয়র মুক্তার চারদিনের রিমান্ডে
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার বিতর্কিত মেয়র মুক্তার আলীকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক আরিফুল হক এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে শুক্রবার ভোরে পলাতক মেয়র মুক্তার আলীকে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশি এলাকার ফুরফুরা মাজার শরীফের পেছনের গ্রাম থেকে মুক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ সময় তাঁর সহযোগী শ্যালক রজন আহম্মেদকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, গত বুধবার রাতে আড়ানী বাজারে এক কলেজশিক্ষককে মারধর করেন মেয়র মুক্তার আলী। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন আহত শিক্ষক। গত বৃহস্পতিবার ভোরে মেয়র মুক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করতে তার বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে মেয়র বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। তবে অভিযানে মেয়রের বাড়ি থেকে চারটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি নানা ধরনের মাদকদ্রব্য এবং নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ও ১৮ লাখ টাকার দুটি চেক জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় মেয়রের স্ত্রী ও দুই ভাতিজাকে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে থানায় মামলা হয়। কলেজ শিক্ষকের মামলা ও বাড়ি থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মেয়র মুক্তার আলীকে শুক্রবার সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তা সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঘা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৈয়ব আলী বলেন, ‘আদালতে মেয়র মুক্তার আলী ও তার শ্যালক রাজন আহম্মেদদের পক্ষে তাদের আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। বিচারক তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। এ সময় আদালত মেয়রের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারপর তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শ্যালক রজনকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন।’
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, মুক্তার আলীকে পাকশী থেকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে আড়ানী পৌরসভার পিয়াদাপাড়া মহল্লার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এক লাখ ৩২ হাজার টাকা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও ধারালো চাকু জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় অস্ত্র ও মাদক আইনে আরও দুটি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়া গত বুধবার মেয়রের স্ত্রী এবং তাঁর দুই ভাতিজাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।