রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী ২ স্ত্রী, প্রথম স্ত্রীকে তালাক
রাজশাহী জেলা পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন বাগমারার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) রেজাউল হকের দুই স্ত্রী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবিকে তালাক দিয়েছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদের নিজ কার্যালয়ে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে নিয়ে তিনি প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার কথা জানান। পরে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে এ বিষয়ে পোস্ট দেন।
রেজাউল হক গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আসকান আলী আসকানের বিপক্ষে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ক্ষতমাসীন দলের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের ছোটো ভাই।
প্রথম স্ত্রীকে তালাকের বিষয়ে জানতে আজ শনিবার চেয়ারম্যান রেজাউল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবি তালাকের বিষয়টি শুনেছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তবে তিনি বলেন, ‘এখনো তালাকের কোনো কাগজ পাননি। তিনি বর্তমানে স্বামীর বাড়িতেই আছেন এবং সন্তানদের নিয়ে সেখানেই থাকবেন।’
ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হকের দুই স্ত্রী হলেন নাছিমা বিবি ও ফিরোজা খাতুন। প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবি শিকদারী গ্রামে রেজাউল হকের নিজস্ব বাড়িতে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুন বাগমারা উপজেলা সদরের ভবানীগঞ্জে ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে নাছিমা ও ফিরোজা সক্রিয়ভাবে প্রচারণা শুরু করেন। তবে, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে তারা কেউ রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হলে শুক্রবার সন্ধ্যায় রেজাউল হক তাঁর ইউপি কার্যালয়ে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকেন। এ সময় তিনি প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবিকে তালাক দেওয়ার বিষয়ে কাগজপত্র লোকজনকে দেখান। তাঁর মতামত উপেক্ষা করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কারণে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন বলে উপস্থিত লোকজনকে জানান রেজাউল। পরে রাতে তিন তালাকের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
আগামী ১৭ অক্টোবর রাজশাহী জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বাগমারা, মোহনপুর ও দুর্গাপুর উপজেলা মিলে সংরক্ষিত সদস্য পদে সাতজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে মাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী নাছিমা বিবি ও ফিরোজা খাতুনও রয়েছেন। অন্য পাঁচ প্রার্থী হলেন—পারুল বিবি, সুলতানা পারভীন, রাবেয়া খাতুন, লাল বানু ও নারগিস বিবি।
চেয়ারম্যান রেজাউল হকের পারিবারিকসূত্র ও প্রতিবেশিরা জানান, ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাছিমা ও ফিরোজা দুজনেই সক্রিয়ভাবে প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে রেজাউল নাছিমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলেন। তবে নাছিমা অনড় থাকায় রেজাউল শুক্রবার তাঁকে তালাক দেন।