রাত ১২টা থেকে বাস ছাড়ার প্রস্তুতি, বেড়েছে সমাগম
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার। তাই গণপরিবহণ চালুর জন্য সব প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকেরা। একইভাবে রাস্তায় গাড়ি চলাচলও বেড়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কমলাপুর, মানিকনগর, বাসাবো, ফকিরাপুল, আরামবাগ, কাকরাইল, বিজয়নগর, পল্টন, দৈনিক বাংলা, মতিঝিল, গুলিস্তান, শাহবাগ, বাংলা মোটর, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, ট্রাফিক সিগন্যালের জ্যাম। সেখানে রিকশাযোগে মানুষকে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। সিগন্যালগুলাতে দুই থেকে তিন মিনিট ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। রিকশা আর ব্যক্তিগত গাড়ি বেশি।
অপরদিকে আজ মধ্যরাত থেকে সব ধরনের গণপরিবহণ চালুর সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। টার্মিনালগুলোতে দেখা গেছে, পরিবহণ শ্রমিকেরা ধোয়া-মোছার কাজ করছেন। পানি দিয়ে বাস পরিষ্কার করছেন। কেউবা জীবাণুনাশক ছিটিয়ে স্টেশন এলাকা পরিচ্ছন্ন করছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এনটিভি অনলাইন বলেন, আমরা আজ এবং গতকাল সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহণ পরিচালনার জন্য আমরা সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। বুধবার রাত থেকেই ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবে দূরপাল্লার বাস। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সিটি সার্ভিস থেকে শুরু করে সব ধরনের গণপরিবহণ চলবে।’
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চলমান বিধিনিষেধ ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত শিথিল করেছে সরকার। এ সময় মাস্ক পরিধানসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ঈদের পর ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত আবার কঠোর বিধিনিষেধ থাকবে। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদের আগে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইতোমধ্যে বাস, ট্রেন, নৌযানসহ গণপরিবহণ চলার ঘোষণা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী (যত আসন, তার অর্ধেক) নিয়ে চলবে এসব গণপরিবহন। কিন্তু ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধের শেষ দিন আজ ঢাকার সড়কে মানুষের বেশ ভিড় দেখা গেছে।
রাস্তায় অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ বেশিসংখ্যক যানবাহন নেমেছে। লোকজন নানা জরুরি প্রয়োজনের অজুহাত দেখিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার কথা জানাচ্ছেন। তাঁদের কাছে যৌক্তিক কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হচ্ছে।
ঢাকার রাস্তায় পর্যাপ্ত রিকশা থাকলেও ভাড়া বেশি বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন বেসরকারি চাকরিজীবী। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা ইয়াসিন আলী বলেন, তিনি রিকশায় করে পান্থপথ থেকে যাবেন গুলিস্তানে। গত কয়েক দিন তিনি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় গেছেন। কিন্তু আজ তাঁকে ১২০ টাকা দিতে হচ্ছে।
কঠোর বিধিনিষেধ অমান্যের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ৫৫২ জনকে আটক করে। এ ছাড়া একই সময় পর্যন্ত ৬৯৬টি গাড়িকে জরিমানা করে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার এ বছরের ৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ দিয়ে আসছে। এর পাশাপাশি এবার স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ বিধিনিষেধ জারি করেছিল। কিন্তু তারপরও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১ জুলাই থেকে সারা দেশে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলেও ঈদ ঘিরে বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।