রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও বাড়বে। এতে আমাদের দেশে পরিবহণ ভাড়া ও কৃষি উৎপাদন খরচও বাড়বে। জ্বালানি তেল বাবদ বাংলাদেশ এখনই প্রতিদিন ১৫ কোটি ডলারের ওপর লোকসান দিচ্ছে। পাশাপাশি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পেও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বুধবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
লিখিত বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ৯ বছরের মধ্যে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম এখন সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতি বছর ৫০ লাখ টন ডিজেল, ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত তেল, ২ লাখ টন ফার্নেস অয়েল এবং ১ লাখ ২০ হাজার টন অকটেন আমদানি করে। এখন যে দামে জ্বালানি তেল কিনে বাংলাদেশ নিজেদের বাজারে বিক্রি করছে, তাতে প্রতিদিন ১৫ কোটি ডলারের ওপর লোকসান গুনতে হচ্ছে।
যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খুব বেশি গম আমদনি না করলেও বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতির কারণে সরবরাহ প্রভাবিত হবে। যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে পণ্যবাহী জাহাজের ভাড়া ও বিমান মাশুল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কিছু ব্যাংককে বৈশ্বিক আন্তঃব্যাংক লেনদেন সংক্রান্ত সুইফট সিস্টেমে নিষিদ্ধ করার ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থা যাদের রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তাদের মূল্য পরিশোধের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন কোনও ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করলে তা হয়তো মাঝপথে আটকে যেতে পারে। এ অর্থ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে।
একই প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যুদ্ধের কারণে আমাদের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে ১ হাজার ১৩৮ কোটি ডলারের ঋণচুক্তিতে আবদ্ধ হয়। এই ঋণের টাকা আসছে প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক হয়ে। কেননা বাংলাদেশ রুবলের বদলে ডলারে ঋণের অর্থ নিতে চেয়েছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা এই লেনদেনে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।