রাষ্ট্রদূতকে রাস্তায় স্মারকলিপি দেওয়ার সংস্কৃতি বাংলাদেশে নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে রাস্তাঘাটে ধরে স্মারকলিপি দেওয়ার কোনো সংস্কৃতি বাংলাদেশে নেই। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
গত ১৪ ডিসেম্বর রাজধানীর শাহীনবাগে নিখোঁজ বিএনপিনেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের যাওয়ার পর সেখানে মায়ের কান্না সংগঠনের উপস্থিতির বিষয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস শাহীনবাগের যে বাড়িতে গিয়েছিলেন, সে বাড়ির দরজা পর্যন্ত মায়ের কান্নার লোকজনকে কেনো যেতে দেওয়া হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো জানতাম না উনি ওখানে গেছেন।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ’মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে রাস্তাঘাটে ধরে স্মারকলিপি দেওয়ার কোনো সংস্কৃতি বাংলাদেশে নেই। ‘মায়ের কান্না’ নামের সংগঠন কেন মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগ না করে ওখানে স্মারকলিপি দিতে গেল? এটা তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে।’
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের একটা প্রচারণা চলছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আসলে এটা পশ্চিমাদের মজ্জাগত। তারা কোথাও যদি কোনো নির্বাচন হতে দেখে এবং সেই দেশ যদি দরিদ্র হয় বা উন্নয়নশীল দেশ হয়, তখন সেখানে তারা নানা পর্যবেক্ষণ দেয়।’
শাহীনবাগের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো অবনতির আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা ছোটখাটো ঘটনা, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক গভীর।’
কূটনীতিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে বোমা হামলার বিষয় টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সরকারের আমল ছাড়া বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রদূতের ওপর সরাসরি হামলার ঘটনা ঘটেনি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে অবিশ্বাস করে, বাংলাদেশ এত ভালো করল কীভাবে? ভালো করছে, সুতরাং ওদের দাবাইয়া রাখো। দাবাইয়া রাখতে হলে ওখানে কিছু সমস্যা তৈরি করতে হবে। অস্থিরতা সৃষ্টি করতে হবে। যে দেশে অস্থিরতা হয়েছে। সে দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। আপনি লিবিয়ার দিকে তাকান। তারা অনেক ভালো ছিল, তারা ঋণ নিত না। অস্থিরতায় সব শেষ হয়ে যায়। এরা অনেকে দেখছে, বাংলাদেশ ভালো করছে। তাই এদের আটকাও। এটা মজ্জাগত সমস্যা। এটা তো নতুন না, ঐতিহাসিক।’
কারা বাংলাদেশকে নিয়ে এমনটা করছে, সে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যারা শক্তিশালী, বুদ্ধিমান দেশ, তারা করে। আর এর সঙ্গে কিছু কিছু আমাদের দেশীয় লোক যোগ দেয়। যোগ দিয়ে তারা পায়ে কুড়াল মারে। তাদের কিছু লক্ষ্য থাকে। তাদের (শক্তিশালী দেশগুলোর) নিজেদের ধ্যানধারণা আছে। সে ধ্যানধারণা মনে করে অন্য দেশও ফলো করবে। আমরা জাতিসংঘে প্রায়ই বলি, একই মডেল সব জায়গায় গ্রহণযোগ্য নয়। দেশে দেশে মডেলের তারতম্য হয়। ওরা মনে করে, তাদের যে মডেল, ওটাই ঠিক। ওটাই তারা চাপিয়ে দিতে চায়।’