রাষ্ট্রপতির সংলাপ প্রহসন ছাড়া কিছুই নয় : নজরুল ইসলাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এর আগে এই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আরও দুইবার সংলাপ হয়েছিল। ওই সংলাপের পর গঠিত নির্বাচন কমিশন দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারেনি। ওই দুটি কমিশন দেশের সবচেয়ে ঘৃণিত কমিশন।’
আজ সোমবার দুপুরে কক্সবাজারে বিএনপির সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তাকে কারাগারে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ দেওয়ার পরও তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে না।’
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীমসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিএনপি ও যুবলীগের একই স্থানে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করায় অন্য স্থানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে বিএনপি। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার শহরের ঈদগাঁও মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘রাতের আঁধারে ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসায় জনগণের প্রতি সরকারের আস্থা নেই। তাই বিএনপির সাংবিধানিক অধিকারও হরণ করছে তারা।’
জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান বলেন, ‘সরকার মানুষের সব গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের পূর্ব নির্ধারিত জনসভাস্থলে যুবলীগের কর্মসূচি দেওয়া তাদের হীনমানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১৪৪ ধারা অমান্য করে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করা বিএনপি নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশের জন্য কোনো স্থানের অনুমতি নেই। কিন্তু বিএনপি সমাবেশ করার চেষ্টা করছে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’
এদিকে, জনসভা করতে না পেরে বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল করছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলা থেকে পথসভায় আসার পথে বাধাপ্রাপ্ত নেতাকর্মীরা উপজেলা শহরেও বিক্ষোভ মিছিল করছে।
এর আগে রাতে কক্সবাজার শহরে একই স্থানে বিএনপি ও যুবলীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। ফলে আজ ভোর থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কক্সবাজার শহরে অবস্থিত বিএনপি অফিস সংলগ্ন শহীদ স্মরণি ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান। ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি রাতে পুরো শহরে মাইকিং করে জনগণকে জানিয়ে দেওয়া হয়। আজ সকাল থেকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনেসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাল্টাপাল্টি সমাবেশের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে কক্সবাজার শহীদ স্মরণিতে আজ সোমবার দুপুর ১টায় এই সমাবেশ ডেকেছিল কক্সবাজার জেলা বিএনপি। পরে একই জায়গায় কক্সবাজার জেলা যুবলীগ পাল্টা সমাবেশের ডাক দেয়।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কক্সবাজার শহরের প্রবেশদ্বার থেকে পুরো শহরের প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ভোর থেকে দায়িত্ব পালন করছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে জেলা পুলিশের।