রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল বুধবার
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় কমিশন সভার আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত হবে।’
আজ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি এ কথা জানান। এদিন দুপুর ২টায় স্পিকারের সাথে বৈঠক করতে সংসদে যান সিইসি।
সিইসি বলেন, ‘আমাদের সাক্ষাৎকার সংক্ষিপ্ত ছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- বুধবার সকাল ১১টায় নির্বাচন কমিশন সভা করব। সভা করে আমরা তফসিলটা উন্মুক্ত করব, তখন আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার আগে স্পিকারের সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ করতে হয়।’
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সিইসি থাকেন নির্বাচনি কর্মকর্তা। সংবিধানের ১২৩ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে এ পদ শূন্য হলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন হবে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের প্রার্থীর রাষ্ট্রপতি হওয়াটা নিশ্চিত।
সবশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয় ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। সে সময় ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও প্রার্থী একজন থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ। আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে তার শেষ মেয়াদ।
এবার ২৩ জানুয়ারি থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে।
এর আগে ১৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে ইসি প্রক্রিয়া শুরু করে বলে জানিয়েছিলেন নির্বাচন কশিমনার মো. আলমগীর। মো. আলমগীর বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের এ প্রক্রিয়া আমরা ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছি। যথাসময়ে নির্বাচন হবে।’
বর্তমান সংসদে ৩৫০ আসনের মধ্যে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করার পর সাতটি আসন শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে ছয় আসনের উপনির্বাচন রয়েছে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি।
সবশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। সেবার ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বরাবরের মতো ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে- নির্বাচনি কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনি কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন।
নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সংসদ সদস্যরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করবে।
ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে। সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।